সম্পাদক পরিষদ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি

ঐকমত্যের ভিত্তিতে চলে : মাহফুজ আনাম, সভাপতির একক সিদ্ধান্তে চলে : নঈম নিজাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্পাদক পরিষদ নিয়ে সভাপতি মাহফুজ আনাম ও পদত্যাগী সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছেন। পদত্যাগের পরদিন নঈম নিজাম পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করে প্রদত্ত বিবৃতিতে আবারও মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক ভাষায় গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, শুধু সভাপতির ব্যক্তিগত ইচ্ছায় সম্পাদক পরিষদ চলছে। পক্ষান্তরে মাহফুজ আনাম তাঁর বিবৃতিতে অপেক্ষাকৃত সংযত ভাষা ব্যবহার করে পত্যাগপত্র পাননি বলে জানান এবং সংগঠন পরিচালনার কাজে তাদের মধ্যে চমৎকার ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, সম্পাদক পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়।

বসুন্ধরা গ্রুপের পত্রিকা ও অনলাইন নিউজপোর্টাল নঈম নিজামের পদত্যাগের সংবাদের মত তাঁর বিবৃতিটিও গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। তবে মাহফুজ আনামের বিবৃতি বসুন্ধরার কোন সংবাদমাধ্যমে চোখে পড়েনি। আবার প্রথম আলো এবং ডেইলী স্টারের বৃহস্পতিবারের সংখ্যায় কেবল মাহফুজ আনামের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য অপরাপর কয়েকটি দৈনিক নীরবতা ভেঙ্গে একদিন পর দু’জনের বক্তব্যই প্রকাশ করেছে।

বুধবার সংবাদমাধ্যমে মাহফুজ আনাম ও নঈম নিজামের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে পাঠানো বক্তব্য নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।

মাহফুজ আনাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নঈম নিজামের পদত্যাগের সংবাদে আমি বিস্মিত ও মর্মাহত। মঙ্গলবার রাতে তিনি নিউইয়র্ক থেকে টেলিফোনে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পদত্যাগপত্র আমি এখনও পাইনি। সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরিষদের অবস্থান জানানো হবে। উল্লেখ্য, সম্পাদক পরিষদের যে কোনো সিদ্ধান্ত সদস্যদের মধ্যে আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নেওয়া হয়। কখনোই এর ব্যত্যয় ঘটেনি। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, নঈম নিজামের সঙ্গে আমার কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং পরিষদ পরিচালনার বিষয়ে তার সঙ্গে আমার কখনোই কোনো মতানৈক্য হয়নি।’

অন্যদিকে, নঈম নিজাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা পরস্পর ঐক্য ধরে রেখে একটি ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু কঠিন বাস্তবতা হলো, সরকারের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে বিবৃতি প্রদান ছাড়া সম্পাদক পরিষদ আর কোনো কিছু নিয়ে কাজ করছে না। সম্পাদকদের একটি প্রতিষ্ঠান শুধু সরকারবিরোধী ভাব নিয়ে চলতে পারে না। পরিষদ পেশার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু সভাপতির ব্যক্তিগত ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠান চলছে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের স্বার্থ রক্ষা সম্পাদক পরিষদের কাজ হতে পারে না। এসব তৎপরতা মিডিয়ার জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। কোনো অপরাধ প্রমাণের আগে কোনো মিডিয়া মালিকের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে বারবার বলার পরও তিনি নিজের অবস্থান থেকে সরেননি বিধায় সম্পাদক পরিষদ থেকে আমার সরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প ছিল না।’

Print Friendly, PDF & Email