‘হিজাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে’

সম্প্রতি গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ‘হাত মোজা, পা মোজা, নাক-চোখ ঢেকে এটা কি? জীবন্ত টেন্ট (তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটার তো কোনো মানে হয় না’- নারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী।

শুক্রবার সকালে এক বিবৃতিতে নারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের জবাবে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, একজন নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে দুই হাত, দুই পা খোলা রাখার অবকাশ নেই। পা থেকে মাথা পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীরে পর্দা করা শরয়ি হিজাবের মূল উদ্দেশ্য।

তবে হিজাব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে উল্লেখকরে তিনি বলেন, একজন মুসলমান ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোনোভাবেই শরিয়তের বিধান নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করতে পারে না।

শরিয়তের অন্যতম বিধান পর্দা সম্পর্কে দেয়া এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে তাওবা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন হেফাজত মহাসচিব।

হিজাব (পর্দা) ইসলামের অন্যতম একটি ফরজ বিধান উল্লেখ জুনায়েদ বাবুনগরী বিবৃতিতে আরও বলেন, একজন নারীর ইজ্জত আবরু রক্ষায় শরয়ি পর্দার বিকল্প নেই। একজন নারী শরয়ি পর্দা মতো চললে সমাজে ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ইত্যাদির ন্যায় অপরাধ ও অনৈকিতা থাকবে না। সমাজ হবে শান্ত ও সুশৃঙ্খল।

পর্দাহীনতার কারণেই আজ নারী নির্যাতন চরম আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশু থেকে শুরু করে সত্তর বছরের বৃদ্ধাও আজ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শুধু নির্যাতন নয়; নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো- বেপর্দা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা।

বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, পবিত্র কোরআন শরিফের সাতটি আয়াত এবং প্রায় ৭০টির মতো হাদিস দিয়ে পর্দার বিধান প্রমাণিত। এসব আয়াত ও হাদিস দিয়ে পর্দার বিধান প্রমাণিত হওয়ার পাশাপাশি সর্বপ্রকারের বেপর্দা হারাম হওয়াও সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়।

‘সুতরাং শরয়ি পর্দা নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন আপত্তিকর মন্তব্য দুঃখজনক। প্রায় ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে পর্দা সম্পর্কে দেয়া এমন বক্তব্যে কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, শরয়ি পর্দা নারীর ভূষণ, ইজ্জত আবরু রক্ষার অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু নারী সমাজ আজ পশ্চিমাদের তালে তাল মিলিয়ে চলাফেরা করে নিজের ইজ্জত আবরু বিনষ্ট করছেন। মানবরূপী নরপশু লম্পটদের ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন।

পর্দা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য নয়; বরং শালীন পোশাক পরিধান, শরয়ি পর্দা ও ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে ইভটিজিং, ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজ গড়তে সবার প্রতি আহ্বান জানান হেফাজত মহাসচিব।
-বিজ্ঞপ্তি

Print Friendly, PDF & Email