ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ এক বছরে দুই ধাপ পেছালো

নিউজ ডেস্কঃ

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান গত বছরের চেয়ে দুই ধাপ নিচে নেমে গেছে। ২০১৯ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮, গত বছরে যা ছিল ৮৬। নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে কোনটির জনগণ কতটা খাদ্যাভাব অর্থাৎ ক্ষুধায় পীড়িত, তা তুলে ধরা হয় বিশ্ব ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে। এই সূচকে ০ থেকে ১০০ পয়েন্টের মাপকাঠিতে দেশগুলোকে ফেলে যাচাই করা হয় কোন দেশটি কতটা ক্ষুধাপীড়িত। এই মাপকাঠিতে ০ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো স্কোর, যার অর্থ সেই দেশটিতে ক্ষুধা নেই, আর ১০০ হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। ১০ এর কম স্কোর পাওয়ার অর্থ হলো সেই দেশে ক্ষুধা সমস্যা কম। ২০ থেকে ৩৪.৯ স্কোরের অর্থ তীব্র ক্ষুধা, ৩৫ থেকে ৪৯.৯ অর্থ ভীতিকর ক্ষুধা আর ৫০ বা তার বেশি স্কোর বলতে বোঝায় চরমভাবে ভীতিকর ক্ষুধায় পীড়িত দেশকে। এই মাপকাঠিতে চলতি বছরের সূচকে মোট ১১৭টি দেশের মধ্যে ২৫.৮ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ‘তীব্র ক্ষুধাপীড়িত’ দেশের তালিকায়।

গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) তৈরি হয়েছে চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের পরিস্থিতি বিচার করে। অপুষ্টি, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম ওজনের শিশু, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশু, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু−এই চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের স্কোর হিসাব করা হয়েছে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে। 

চলতি বছরসহ ৫ বছরে অবস্থানে খুব সামান্য তারতম্য হলেও দীর্ঘমেয়াদি চিত্রে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রমোন্নতির চিত্র। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০’র মধ্যে ৩৬.১, অর্থাৎ ‘ভীতিকর’। এর ৫ বছর পর, ২০০৫ সালের সূচকে সেই স্কোর কমে ৩০.৭-এ দাঁড়ায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ ‘ভীতিকর’ থেকে ‘তীব্র’ ক্ষুধাপীড়িত দেশের পর্যায়ে চলে আসে। আরও ৫ বছর পর অর্থাৎ ২০১০ সালে স্কোর সামান্য একটু কমে ৩০.৩ হয়। আর তারপর টানা ৯ বছরের ব্যবধানে এবারের সূচকে বাংলাদেশ পেল ২৫.৮, যা ধারাবাহিক উন্নতিকেই সামনে এনেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে ধারাবাহিকভাবে। মোট স্কোর গতবারের ২৬.১ থেকে কমে হয়েছে ২৫.৮। তারপরও বাংলাদেশ বৈশ্বিক অবস্থানে দুই ধাপ পিছিয়েছে, কারণ অন্যদের উন্নতি ঘটছে আরও দ্রুতগতিতে। বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য দেশের মধ্যে ভারত ১০২, পাকিস্তান ৯৪, নেপাল ৭৩, মিয়ানমার ৬৯ এবং শ্রীলঙ্কা ৬৬তম অবস্থানে রয়েছে। ভুটানের স্কোর নির্ণয়ের মতো পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জিএইচআই’র ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email