শিরোনাম :

  • সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

হাইকোর্টের সামনে অবরোধের মামলা

ফখরুলসহ চার নেতার ৮ সপ্তাহের জামিন, আরো যারা আসামি

আদালত প্রতিবেদক |

হাইকোর্টের সামনে সংঘর্ষের ঘটনার পর দায়ের করা মামলায় ৮ সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন বিএনপি সহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ চার নেতা। আজ বৃহস্পতিবার এ চার নেতা হাইকোর্টের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রিয়াজ উদ্দিন খানের দ্বৈত বেঞ্চে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের আগাম জামিন মঞ্জুর করে এই সময়ের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।

জামিন প্রাপ্ত অন্য নেতারা হলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের সামনে অবস্থানকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রমনা থানায় দলটির ৫০০নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।

মামলায় আসামি যারা

হাইকোর্টের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

শাহবাগ থানায় করা এই মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৫শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসআই মতিউর রহমান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করেন। মামলায় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বিএনপি নেতা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে ২ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে এসআই মতিউর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

মামলার এজারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, শওকত মাহমুদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবউন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক জনাব সাদেক খান, যুবদলের সভাপতি জনাব সাইফুল ইসলাম নীরব, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জনাব শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী তালুকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ছাত্র বৃত্তি সহ সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ, সাইফ মোহাম্মদ জুয়েল, ছাত্রদল ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রবিন প্রমুখ। এই তথ্য জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল।

এদের মধ্যে তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন-ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এর আগে সকালে সুপ্রিমকোর্টের ফটক থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে আটক করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, খায়রুল কবির খোকনকে হাইকোর্টের সামনে থেকে আটকের পর শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সামনে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির ৫০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি ইতিমধ্যে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খায়রুল কবিরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে বলে জানান ওসি। এ বিষয়টি ডিবি পুলিশ দেখবে বলে জানান আবুল হাসান।

খোকনের স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি উপলক্ষে আমি ও খোকন একই গাড়িতে হাইকোর্টে যাচ্ছিলাম। গেট থেকে তাকে পুলিশ নিয়ে গেছে। তাকে কেন আটক করা হয়েছে, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

খোকনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) এসএম শামীম গণমাধ্যমকে বলেন, খোকনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে গ্রেফতার হন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। তাকে একই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

উল্লেখ্য, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাকর্মীরা গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় এ মামলা করা হয়।