আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
৫৪ দিন পর ফটো সাংবাদিক কাজলের সন্ধান মিললো বেনাপোলে
নিজস্ব প্রতিবেদক।
নিখোঁজ ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের সন্ধান মিলেছে। যশোরের বেনাপোলে তাঁকে আটক দেখানো হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিজিবি তাঁকে সীমান্তবর্তী একটি মাঠ থেকে আটক করেছে বলে বেনাপোল পুলিশ বলছে। এখন বিজিবি ক্যাম্পে আছেন। তাঁর পুত্র পলক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পলক তার বাবাকে আনার জন্যে যশোরের পথে রয়েছে বলে দেশনিউজকে জানিয়েছে।
নিখোঁজ হওয়ার ৫৩ দিন পর সন্ধান মিললো এ সিনিয়র ফটো সাংবাদিকের। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের সকালে কাজলের সন্ধান মেলায় পরিবার ও সাংবাদিক মহলে স্বস্তি ফিরেছে। ১০ মার্চ ঢাকার নিজের পত্রিকার অফিসের সামনে থেকেনিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের সরকার দলীয় এক এমপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেত্রীর সঙ্গে ওই এমপির সম্পর্ক ইঙ্গিত করা সংবাদ কাজল তার ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন বলে অভিযোগ।
শফিকুল ইসলামের ছেলে মনোরম পলক জানান, শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮ মিনিটে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। বেনাপোল থানার একজন পুলিশ সদস্যের ফোন থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভাল আছেন বলে জানান।
আজ রোববার ঢাকা থেকে পরিবারের সদস্যরা শফিকুল ইসলামকে আনতে যাচ্ছেন। সকাল ৮ টায় পলক দেশনিউজকে জানান তারা যশোরের পথে সাভার অতিক্রম করছে ।
বেনাপোল থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ওবায়দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শনিবার রাতে বিজিবি এক ব্যক্তিকে তাঁদের কাছে দিয়ে যান। পরে তাঁরা জানতে পারেন এই ব্যক্তিই নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল।
সাংবাদিক কাজলের বিষয়ে বিজিবির রঘুনাথপুর ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার আশেক আলী বলেন, ‘বেনাপোলের সাদিপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে প্রবেশের সময় সাংবাদিক কাজলকে আটক করা হয়। বর্তমানে তিনি আমাদের হেফাতজতে আছেন। পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এদিকে কাজলের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন বলেন, ‘ফোনে কাজলের সঙ্গে কথা হয়েছে। বেনাপোল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে নিতে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন।’
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে নিখোঁজের ঠিক ৩০তম দিনে (৯ এপ্রিল) সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি বেনাপোলেই চালু হয়েছিল। তখন কাজল নিখোঁজের বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আবদুল লোকমান বলেছিলেন, ‘নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি চালু হয়েছিল। লোকেশন দেখিয়েছে বেনাপোল। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ও নম্বরটি চালু থাকার সময় কম হওয়ায় বেনাপোলে কোনও অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।’
প্রসঙ্গত, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনও সন্ধান না পেয়ে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় পরিবার। ১৮ মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সাংবাদিক কাজলের সন্ধান চাওয়া হয়। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হওয়ার পর তার সন্ধানের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েকদফা কর্মসূচি পালন করেছেন সাংবাদিক সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।