ফের সিসিইউতে খালেদা জিয়া, এনজিওগ্রামের প্রস্তুতি চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ▪️

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত (১১ জুন) ৩টা ২০ মিনিটে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে দ্রুত তাকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ২টা ৫৫ মিনিটে তাকে নিয়ে গুলশানের বাসা থেকে হাসপাতালের পথে রওনা দেওয়া হয়। পরে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে রাত ৩টা ২০ মিনিটে চেয়ারপারসনকে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই বেগম খালেদা জিয়া অস্বস্তি ও অসুস্থতা বোধ করেন। খবর জানার পর ছুটে যান ডা. জাহিদসহ ব্যাক্তিগত একাধিক চিকিৎসক। তাঁরা পরীক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। খবর পেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যরাও ছুটে যান।

হাসপাতাল থেকে বের হয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ডাক্তাররা ইতোমধ্যে যে পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন, তার মধ্য দিয়ে দেখা গেছে যে, আগের দিন বিকাল থেকেই তার হার্টে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, উনি তো একটু চাপা মানুষ, কাউকে বলেননি। পরে ডাক্তাররা যখন আজকে চেক করতে গেছেন, ডাক্তার জাহিদ এবং সিদ্দিক সাহেব দেখেছেন যে, তার প্রব্লেম হয়েছে। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে তাকে তাড়াতাড়ি (হাসপাতালে) নিয়ে যাওয়া হবে।

এখন খালেদা জিয়া স্টেবল আছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করার পরে, বিশেষ করে এনজিওগ্রাম করার পরে বোঝা যাবে যে, তার সমস্যা কতটা জটিল।

এ নিয়ে গত দুই বছরে চতুর্থবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হৃদরোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, ফুসফুস, কিডনি, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন অনেকদিন ধরে।

টানা দুইমাস ২১ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর চলতি বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসায় ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তার শরীরে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করেন চিকিৎসকরা। দলের পক্ষ থেকেও বিদেশে চিকিৎসার দাবীতে নানা কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি। সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকেও আবেদন করা হয়েছে।তবে আইনে সেই সুযোগ নেই বলে ক্ষমতাসীন সরকার তা নাকচ করে দেয়। অথচ হাজী সেলিমসহ অনেকেই সাজা মাথায় নিয়ে দিব্যি বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email