`বহু তথ্য আমার কাছে আছে, অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও তথ্য আছে‘

সাংবাদিক জয় যাদব প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও জানতে চান, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে পুরোনো ৩১ জন প্রশাসককে বাদ দেওয়া হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরোনো কাউকে বাদ দেওয়া হবে কি না? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনোনয়নের ব্যাপারে পরিবর্তন স্বাভাবিক। অবশ্যই আমরা যাচাই করব কার জেতার সম্ভাবনা আছে। কার জেতার সম্ভাবনা নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, সেটাই আমরা চাই। আর যদি না করে, সেটা যার যার দলের সিদ্ধান্ত। আমরা তো সংবিধান বন্ধ করে রাখতে পারি না। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে, আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।’

একটানা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ভুলে গেছেন ৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর বারবার ক্যু হচ্ছিল। একেকটা মিলিটারি ডিক্টেটরের পর একেকজন আসছিল। ডিক্টেটরের স্ত্রী ক্ষমতা নিয়ে গেল। জনগণের কী ছিল? তাদের কি আসলে কোনো অধিকার ছিল? সারা রাত কারফিউ। কথা বলার অধিকার নেই। কে কোথায় গায়েব হয়ে যাচ্ছে, তার ঠিক নেই। তখন এটাই ছিল বাংলাদেশের অবস্থা।’

প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা এখন টক শো করেন। যে যাঁর মতো করে কথা বলেন। একটা কথা জিজ্ঞেস করি, আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগে এত কথা বলার সুযোগ ছিল কি? কেউ কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন? সব কথা বলার পরও অনেকে বলেন কথা বলার অধিকার নেই। এটাও আমাদের শুনতে হয়।’
নিজ দলের কেউ অন্যায় করলে ছাড় দেওয়া হয় না বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অন্যায় করলে কেউ পার পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন যারা তত্ত্বাবধায়ক বলে চিৎকার করছে, তারা কি ওয়ান-ইলেভেনের কথা ভুলে গেছে? তখন কী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। সেখান থেকে সবাই মুক্তি পেয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২২—এই সময়ে স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, চলার অধিকার, সমালোচনার অধিকার সবই তো পাচ্ছেন। কারও মুখ তো বন্ধ রাখছি না। আপনারা মত প্রকাশ করেন।’

সংবাদ সম্মেলনে চলমান ডলার-সংকট নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডলার-সংকট বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়। এটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। যুক্তরাষ্ট্র যখন রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দিল, তারপর পরিস্থিতি জটিল হলো। সংকট বাড়ল। তিনি বলেন, ডলার নিয়ে একটি শ্রেণি খেলতে শুরু করেছে। আমরা সেখানে রাশ টেনেছি। বিশ্বে যে সংকট দেখা যাচ্ছে, হয়তো সামনের বছর আরও বেশি সংকট দেখা দেবে। বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক চরম দুরবস্থা দেখা দেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ যদি শেষ না হয়, এই নিষেধাজ্ঞা যদি না ওঠে, তাহলে বিশ্বের অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে। প্রকৃতিও ভালো যাচ্ছে না। আমাদের আগে থেকে ব্যবস্থা থাকতে হবে। আপনারা নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা করে রাখেন। সঞ্চয় করে রাখেন।’

Print Friendly, PDF & Email