নারায়ণগঞ্জ ট্রাজেডিতে মৃত্যুর কোলে সাংবাদিক নাদিমও

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি |

নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এবার এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম নাদিম (৪৫)। তিনি ভোরের কথা নামের একটি পত্রিকায় কাজ করতেন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ২১ জনে দাঁড়াল।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাদিমের মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই মসজিদের ইমাম আবদুল মালেকসহ আরও একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাহারউদ্দিন (৫৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়।

মৃত অন্যরা হলেন- রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপরী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (৭), জয়নাল আবেদিন (৪০), মাইনুদ্দিন (১২), রাসেল (৩৪), মো. নয়ন (২৭) ও কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩)।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম মৃত্যু হয় জুয়েল নসমে এক শিশুর । এরপর রাতে, সকালে ও বিকেলে অন্যদের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৫০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়াহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

ভর্তির পর ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন, এ পর্যন্ত ৩৭ মুসল্লিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবারই ডিপ বার্ন রয়েছে। শতাংশের হিসেবে কোন রোগীর কতটুকু বার্ন হয়েছে তা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, কেউ শঙ্কামুক্ত নন।

এদিকে প্রাথমিকভাবে এসি নয় গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ কথা জানান তিনি।

এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস একটি, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি ও জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

Print Friendly, PDF & Email