তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে খায়রুল হকের রায় অবৈধ ছিল: খন্দকার মাহবুব

Mahbubনিজস্ব প্রতিবেদক: তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের দেয়া রায় যে অবৈধ ছিলো সেটি আরো স্পষ্ট হয়েছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যের মাধ্যমে। বুধবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

এর আগে, গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, অবসরে যাওয়া বিচারপতিরা যে রায় লেখেন তা সংবিধান ও আইনপরিপন্থী। কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আশা করি বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এই বক্তব্য দিলেন।

স্মরণ করা যেতে পারে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম আলোচিত একটি রায়- সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল সেই আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় আসে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের অবসরে যাওয়ার পর।

অভিযোগ রয়েছে, অবসরে যাওয়ার পর বিচারপতি খায়রুল হক আলোচিত এ মামলার রায় লেখেন এবং সংক্ষিপ্ত আদেশে পরবর্তী দুটি নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার কথা বলা হলেও পূর্ণাঙ্গ রায়ে তার উল্লেখ ছিল না।

১৯৯৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু হয়েছিল। ২০১১সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। সংক্ষিপ্ত আদেশে বলা হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন, ১৯৯৬ (আইন-১: ১৯৯৬) এখন থেকে বাতিল ও সংবিধান-পরিপন্থী ঘোষণা করা হলো।

৭৪৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ ওই রায়ে সই করেন বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বর্তমান বিচারপতি এস কে সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. ইমান আলী। এর আগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক তাঁর লেখা ৩৪২ পৃষ্ঠার রায়ে সই করেন।

উল্লেখ্য, বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বর্তমানে আইন কমিশনের চেয়াম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Print Friendly, PDF & Email