• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বিএনপি’র গঠনতন্ত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন

20160319_102258নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে ‘এক নেতা এক পদ’সহ দলের গঠনতন্ত্রের অন্তত ৩০টি সংশোধনী অনুমোদন করেছেন কাউন্সিলররা। কাউন্সিলের দ্বিতীয় পর্বের মাঝামাঝি সময়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটির আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম। তারই অনুরোধে প্রস্তাবগুলো পাঠ করে শোনান স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সংশোধনীগুলো পড়ে শোনানোর সময় হাততালি দিয়ে এসব অনুমোদন করেন কাউন্সিলররা। সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক নেতা এক পদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় কোন নেতা, কোন অঙ্গদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক একই সঙ্গে জেলা বা মহানগর কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে পারবেন না। তবে চেয়ারপারসন বিশেষ বিবেচনায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম অনুমোদন করতে পারবেন। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সুনির্দিষ্টকরণের মাধ্যমে বলা হয়েছেÑ চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে তিনি তার সমুদয় দায়িত্ব পালন করবেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান হবেন এবং নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই পদে বহাল থাকবেন। চেয়ারপারসনের পাশাপাশি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন একসঙ্গে অনুষ্ঠানের বিধি যুক্ত করা হয়েছে। চেয়ারপারসনের ক্ষমতা বাড়িয়ে বলা হয়েছে, তিনি স্থায়ী কমিটি ভেঙে দিতে এবং পুনর্গঠন করতে পারবেন। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ে পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদের পরিধি বাড়িয়ে ৩৫ করা হয়েছে। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার বদলে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল আখ্যায়িত, তাদের নিয়োগের এখতিয়ার চেয়ারপারসনের উপর অর্পণ এবং সংখ্যা অনির্ধারিত রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের পদমর্যাদা ভাইস চেয়ারম্যানের এবং কাউন্সিলরের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। দেশের নতুন বিভাগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিভাগওয়ারী সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রতিটি বিভাগে দুইজন করে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নতুন করে সাতজন সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, চারজন ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক, দুইজন প্রশিক্ষণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক, দুইজন স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক (চিকিৎসক ও নার্স), অর্থ-জলবায়ু সহসম্পাদক, ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক, গণশিক্ষা, বন ও পরিবেশ, তাঁতী বিষয়ক, স্বনির্ভর বিষয়ক, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক, প্রবাসী বিষয়ক, বিজ্ঞান বিষয়ক, মানবাধিকার বিষয়ক, উপজাতি বিষয়ক সহ-সম্পাদকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে একটি করে। ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টিসহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানসহ কয়েকটি পদের নামের পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে বিষয়ভিত্তিক উপকমিটি গঠনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। উপকমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ অর্থ ও পরিকল্পনা, পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা, নারী ও শিশু, আইন ও বিচার, শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণ, যোগাযোগ ও গণপরিবহন, ত্রান ও পুনর্বাসন, মুক্তিযুদ্ধ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, উপজাতি বিষয়ক ইত্যাদি। গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, এসব কমিটিতে বিএনপির রাজনীতি করেন না কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। সকল পর্যায়ে ১০ভাগ নারীর প্রতিনিধিত্ব বিধিতে যুক্ত করে বলা হয়েছে আগামীতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। দলের সকল প্রচারপত্র প্রকাশ ও প্রচারে আগে দলের স্থায়ী কমিটির অনুমোদনের বিধি থাকলেও সেটা শিথিল করে কেবল গুরুত্বপূর্ণ প্রচারপত্রের অনুমোদনের কথা যুক্ত করা হয়েছে। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে ইউপি থেকে জেলা পর্যায়ে কমিটিতে নেতা ও সদস্যদের মাসিক চাঁদা নির্ধারণ ও সেটা পরিশোধ না করলে সদস্যপদ স্থগিত ও বাতিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। জেলা থেকে ইউপি পর্যায়ে কমিটির পদের সংখ্যা নির্ধারণ ও নতুন পদ সৃষ্টির বিধান যুক্ত করা হয়। সেখানে বলা হয় এলাকা ভিত্তিতে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হবে। এ পর্যায়ের কমিটিগুলো মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে নতুন কমিটি করবেন। প্রতিটি কমিটিই তাদের অধিনস্ত কমিটির অনুমোদন দিতে পারবে তবে এ জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির অনুমোদন নিশ্চিত থাকতে হবে। এ পর্যায়ের কমিটিগুলো শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারও সদস্যপদ স্থগিত করতে পারবেন তবে উপজেলা-জেলা পর্যায়ের কোন নেতা বা সদস্যকে বহিস্কারে চেয়ারপারসনের অনুমোদন লাগবে। এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ের কমিটির ক্ষেত্রে কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কমিটির পরিসর ও চাঁদার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটি একটি গাইড লাইন দেবে। গঠনতন্ত্রে দলের চেয়ারপারসন কার্যালয়ের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি গবেষণা কেন্দ্র এবং একটি মিডিয়া উইং প্রতিষ্ঠা করবেন চেয়ারপারসন। চেয়ারপারসনের অনুমোদনক্রমে কোন সংগঠন সহযোগী সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হবে। এ জন্য অঙ্গ ও সহযোগী দলের বিধানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদনের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও নির্বাহী কমিটির বাকি পদগুলো নির্বাচনের একক ক্ষমতা ও সর্বময় কর্তৃত্ব চেয়ারপারসনের ওপর অর্পনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের ওপর আমাদের সবার আস্থা আছে এবং বাস্তব কারণে এ কমিটি গঠনে সময়ের প্রয়োজন। কাউন্সিলররা দুই হাত তুলে তার এ প্রস্তাব অনুমোদন দেন। এর আগে দলের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদের নির্বাচনের ফলাফল কাউন্সিলে উত্থাপন করলে কাউন্সিলররা সে ফলাফল অনুমোদন দেন। কাউন্সিলের সমাপনী বক্তব্যে খালেদা জিয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে বলেন, রকিবউদ্দীন মানুষ না, তাকে মানুষ এতো গালিগালাজ করেন, তবু যান না। কিন্তু বিএনপি জনগণের দল, নির্বাচনমুখী দল। হাসিনা-মার্কা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। কিন্তু সেটি হাসিনা-মার্কা নির্বাচন নয়। শেখ হাসিনা বাদেই ভবিষ্যতে নির্বাচন হবে। সে জন্য এখন থেকেই কাজ করতে হবে। হাসিনা মার্কা নির্বাচন নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক হয়নি, চুরি হয়েছে। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা পত্রিকায় লিখলে গুম করে ফেলা হবে। তাই তারা রাঘব বোয়াল লিখছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক কিছু বের হয়েছে। আপনারা সেটা জানেন, পড়েছেন। আপনারা জানেন কে এর সঙ্গে জড়িত। সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান হাসিনাকে অবহিত করেছেন। কিন্তু হাসিনা কোন ব্যবস্থা নেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেছেন এবং তাঁকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে। তবে ভদ্রলোকেরও দোষ আছে। তিনি সত্যটা কেন বললেন না? মেরে ফেলতো? সে সাহস কখনই পেতো না। হাসিনা নাকি কেঁদেছেন। কাঁদবেনই তো, ছেলে অপকর্ম করবে, আর দায়ভার অন্য কেউ নেবেন। দলে যোগ্য ও পরিক্ষীতদের জায়গা দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় কিছু বেইমান বিএনপিতে ঢুকেছিল। এখনও বিএনপিতে বেইমান, মীর জাফর আছেÑ এটা স্বীকার করতে হবে। তাদের কারণে আন্দোলন সফল হয় না। আন্দোলন যখন তুঙ্গে ওঠে তখন তারা বেইমানি করে আন্দোলন ফলপ্রসূ হতে দেয় না। কমিটি গঠনে কোন লেনদেন চলবে না এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে লেনদেন হবে না। আমরা সবাইকে চিনি। ত্যাগী, যোগ্য ও সাহসী লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। তৃণমূল কমিটি যারা করবেন তাদেরকে বলবো ত্যাগী, যোগ্য ও সাহসী লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করবেন। এ সময় তিনি যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি কাউন্সিলরদের কোথাও পকেট কমিটি সুপারিশ না করার কড়া নির্দেশ দেন। দুর্নীতিবাজদের দলে সুযোগ না দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি জেলা নেতাদের বলেন, তাদের বাদ দিলেও বিএনপিতে লোকের অভাব হবে না। দলে মেয়েদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, মেয়েরাও কাজ করেছে। তাদের অন্তত ১০ শতাংশ পদে দিতে হবে। বিদেশিরাও জানতে চান, তোমাদের মাঝে নারী নেই? তিনি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নারীদের কমিটিতে স্থান দিতে নেতাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আপনারা চা-দোকানে যখন যান, মানুষ বলেন, আপনারা ঠা-া হয়ে গেলেন কেন? কারণ, তারা অস্থির। তারা জানেন, বিএনপি ছাড়া কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। জনগণ তৈরি। বিএনপিকে জনগণের জন্য আন্দোলনে প্রস্তুত হতে হবে। বক্তব্যের শুরুতেই কাউন্সিলররা সবাই খাবার পেয়েছেন কি-না জানতে চান খালেদা জিয়া। তারপর ভেন্যুর আকার ও নানা অসুবিধার কথা জানান। এর আগে কাউন্সিলের দ্বিতীয় পর্বে বিএনপির দলীয় রিপোর্ট পেশ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আলোচনা পর্বে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সামনে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কাউন্সিলররা। তুলে ধরেন নিজেদের নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। নেতাদের নানা অযোগ্যতায় বিরক্তি প্রকাশ করে তারা বলছেন, কমিটির নামে তারা আর বাণিজ্য চান না। প্রথম বক্তা নাটোর জেলা সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বিশ্বাসঘাতক ও সুবিধাবাদী কাউকে নতুন কমিটিতে দেখতে চান না। নতুন নেতৃত্বে দেখতে চান ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের। যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এখন সমালোচনা-বিভাজনের সময় নয়। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জানেন দলের কোন নক্ষত্র কি করেন। বরিশাল উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, শুধু বিএনপির মহাসচিব চাই না, তাকে অভিভাবক হিসেবে চাই। কেন্দ্রে বসে কেবল নির্দেশ পাঠালে হবে না, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হবে। নতুন কমিটিতে কোন বেঈমান, মীরজাফর চাই না। তৃণমূল কখনও বেঈমানি করে না। দূরে তাকানোর প্রয়োজন নেই, ডানে-বামে ও পেছনে তাকালেই যথেষ্ট। ছাত্রদলই যুবদল হবে, তার জন্য নেতা ধার করে আনতে হবে না। কালিয়াকৈরের হুমায়ুন কবির বলেন, কমিটির নামে যে বাণিজ্য চলে, সেটি বন্ধ করবেন। নির্বাহী কমিটিকে নিয়ে কার্যকর মিটিং না হলে সে কমিটির মূল্য নেই, তার নাম লিমিটেড কোম্পানি হলেই ভালো। বরিশাল দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক বিলকিস শিরিন বলেন, মেয়েরা সব কর্মসূচিতে সমান ভূমিকা রেখেও কেন বড় পদ পায় না। তখন কেন এতো প্রশ্ন করা হয়? আমাদের নারী হিসেবে নয়, কর্মী হিসেবে মূল্যায়ন করুন। টঙ্গীবাড়ীর খান মনিরুল মনি বলেন, আমাদের নেতাদের মধ্যে একদল টিভিতে চেহারা দেখাতে ব্যস্ত। আরেক দল মুখোশধারী, বড় পদে আসীন। আরেক দল এখন আন্দোলনের মিছা ফাইল এনে পদের জন্য তদবির করছেন। এদেরকে নয়, তৃণমূল থেকে নেতা দিন। সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ তার বক্তব্যে দলের নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর অবদান ও তাকে উদ্ধারের বিষয়ে জোর দিয়ে বক্তব্য দেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ, ঠাঁকুরগাঁও জেলা সাধারণ সম্পাদক তৈমুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ তাদের বক্তব্যে খালেদা জিয়াকে দলের নেতা নির্বাচনের ভার দিয়ে তার সুফল প্রত্যাশা করেন। কাউন্সিলরদের বক্তব্যে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব ঘোষণার দাবিও তোলেন। এর আগে দ্বিতীয় পর্বের শেষদিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান স্বাধীনতার মাসে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী, শহীদ ও যুদ্ধাহতসহ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সেই সঙ্গে দলে অবদান রাখা প্রয়াত নেতা ও নিহত-আহত নেতাকর্মীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। পুনরায় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আলমগীর কাউন্সিলরদের ধন্যবাদ জানান। আন্দোলনের সময় গুম হবার দীর্ঘদিন পর উদ্ধার হওয়া ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন কাউন্সিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে তার আত্মত্যাগকে দলের জন্য উৎসর্গ করেন। দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। এতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, আওয়ামী সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মৃত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য শোক জানানো হয়। পরে তিনি দলের অর্থনৈতিক বিষয়ে প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। এদিকে বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক গাজী মাযহারুল আনোয়ার ও জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মনির খানের নেতৃত্বে শেষে অনুষ্ঠিত হয় গান, গীতিনাট্য, নাচের সমন্বয়ে রাজনৈতিক বক্তব্যধর্মী একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতা এ সাংস্কৃতিক পর্ব উপভোগ করেন।

Print Friendly, PDF & Email