শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

সাংবিধানিক জটিলতার কবলে বাংলাদেশ- ডব্লিউএলপি

We Love Politics-WLP এর উদ্যোগে সাংবিধানিক সংস্কার ও রাজনীতি শীর্ষক এক আলোচনা সভা ২ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যাডভোকেট তারেক আব্দুল্লাহ’র সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষক লোকমান বিন নূর।
তিনি বলেন, সংবিধানের কাজ হচ্ছে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠন করা। ক্ষমতার অতি প্রয়োগ বা অপপ্রয়োগ রোধ করা। একটি রাষ্ট্র রাষ্ট্র হয়ে ওঠার জন্য সংবিধানের বাস্তবায়ন জরুরী। সংবিধান অনুযায়ী আমরা আমাদের রাষ্ট্রকে তৈরি করতে না পারার দরুন দেশে আজ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দৃশ্যমান হচ্ছে। রাষ্ট্র ক্ষমতা চর্চা করার জন্য নির্বাচন একটি সাংবিধানিক মাধ্যম হলেও নিজেদের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করে কেউ কেউ নিজেদের আখের গোছানোর কাজে মত্ত।

দল এবং রাষ্ট্রকে একাকার করে দেয়ার মাধ্যমে গনতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি শাখাকে রাজনীতিকিকরন করা হয়েছে। কেউ সেনাবাহিনী দিয়ে দেশ চালায়, কেউ পুলিশ দিয়ে দেশ চালায়। সংবিধানে জনগণের যে অধিকার তা হরণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সংবিধানে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস বলা হলেও তা কেবল সংবিধানের ধারাতেই সীমাবদ্ধ।

এই সংকট থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে জনগণের জন্য সংবিধানকে নতুন ভাবে সংশোধন করা। জনগণের অধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে জনবান্ধব সংবিধান প্রণয়ন করা।
আলী নাছের খান বলেন, বর্তমান কাটাছেঁড়া লণ্ডভণ্ড সংবিধানে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন নেই। বিভিন্ন সময়ে সংবিধানে ছুরি চালিয়ে শাসক দলগুলো নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করেছে মাত্র। ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করে সংবিধানের আমূল সংস্কার ২০ কোটি জনগণের দাবি এবং তা রাজনৈতিক ফায়সালার মাধ্যমেই করতে হবে। জনদাবী উপেক্ষা করে ফ্যাসিস্ট সরকারের সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী দেশ চললে গোটা রাষ্ট্রকাঠামো মুখ থুবড়ে পড়বে, দীর্ঘ মেয়াদে নৈরাজ্য বিরাজ করবে, দেশ পরিচালনায় গুরুতর বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে, যার পরিনাম হবে অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি।
এসএম তাসমিরুল ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ওয়াদা করে পরবর্তীতে ভিন দেশ থেকে ধার করা চার মূলনীতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে জাতিকে বিভাজন ও চাপিয়ে দেয়ার যে রাজনীতি শুরু হয়েছিল তা আজও দেশের শাসন কাঠামোতে বিদ্যমান আছে৷ সংবিধান প্রণয়ন, সংশোধন এবং এর বিকাশে দেশের মানুষের প্রত্যক্ষ কোন অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায় না। যার ফলে এই সংবিধানে জনগণের মতামতের প্রতিফলন পাওয়া যায় না৷ আজকে যুগের চাহিদাকে সামনে রেখে জনগণের মননের প্রতি লক্ষ্য রেখে সময় এসেছে সংবিধানে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটানোর।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, এবিএম খালিদ হাসান, অ্যাড. আব্দুল কাদের মুন্সী, ইঞ্জিনিয়ার গাজী সাবের আহমেদ, মোঃ সোহাগ হোসেন, সাইফুল ইসলাম মির্জা, মিনহাজুল আবেদীন শরিফ, তামজীদ আহমেদ, বোরহানুল হায়দার, শরীফ হোসেন, ইমন শাহরিয়ার, হাসিবুর রহমান, ইয়াসিন আরাফাত, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম তুহিন, বোরহান, আব্দুলাহ আল রায়হান সহ আরো অনেকে। এছাড়াও যুক্তরাজ্য থেকে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন ব্যারিস্টার আব্বাস আলী খান নোমান।