বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহতদের (ভিকটিম) ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে সম্প্রতিক সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার নিরপেক্ষ, স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্ত চায় জাতিসংঘ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠনো এক চিঠিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক চলমান সংকট নিরসনে বাংলাদেশকে সবরকম সহায়তা প্রস্তাব করেন। সেখানে তিনি কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর স্বচ্ছ তদন্তের তাগিদ দেন। চিঠিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, গণগ্রেপ্তার ও নির্যাতনে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানান হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক। তিনি আন্দোলকারীদের ওপর সবরকম নির্যাতন বন্ধে এখনই পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। গত ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠনো চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। যার জবাব প্রস্তুত করছে সেগুনবাগিচা। চিঠিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক আরও বলেন, সম্পূর্ণ ইন্টারনেট বন্ধ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনেকে হতাহত হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সে অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতি গুলি চালিয়েছে। গণগ্রেপ্তার, নির্বিচারে আটক, যত্রতত্র দুর্ব্যবহার এবং নির্যাতন করেছে।
এছাড়া সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গোষ্ঠি আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে। এ সময় আন্দোলনকারীদের সুরক্ষায় সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি বরং তাদের (আন্দোলন দমনে) বিরুদ্ধে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির মতো আধা সামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে। যা তাদের আরও ঝুঁকিতে ফেলেছে। ভলকার তুর্ক সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিরোধীদের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমরা অবগত। যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করেছে। চিঠিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান মানবাধিকারসহ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের অবদানের কথা স্বীকার করেন। তিনি মানুষের মধ্যে বিশ্বাস পুনঃস্থাপন এবং সংলাপের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল অপারেশনকে আর্ন্তজাতিক মানবাধিকারের মান অনুযায়ী পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান।