ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান বিশিষ্টজনের
‘সরকারের ক্রমাগত চাপে’ ২০-দলীয় জোট ছাড়লো ইসলামী এক্যজোটের একাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিল ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধতার অনিবার্যতা দিন দিন ব্যাপক ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় ইসলামী ঐক্যজোট স্বকীয়তা বজায় রেখে নিজেদের সাংগঠনিক তৎপরতায় মনোযোগী হবে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে তার দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জানিয়ে লতিফ নেজামী অবিলম্বে সবার অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানান।
এদিকে, বিকেলে জরুরি প্রেস ব্রিফিং ডেকেছে বিএনপি। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতেই এ ব্রিফিং হবে।
তবে ২০-দলীয় জোট ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। ২০-দলীয় জোটের বিভিন্ন দলকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সরানোর চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ফেলানী ও আমাদের গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জোট ভাঙার এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০-দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামবে, আমরা সে অপেক্ষায় আছি।
জোট ছাড়ার নেপথ্যেঃ
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে চার-দলীয় জোট গঠিত হয়। এই জোটের অন্য তিনটি দল হলো- জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও ইসলামী ঐক্যজোট।
পরে এটি পর্যায়ক্রমে ২০-দলীয় জোটে পরিণত হয়। জোট গঠনকালীন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনী।
সে সময়ের মহাসচিব আব্দুল লতিফ নেজামী বর্তমানে দলটির চেয়ারম্যান। আর মহাসচিব হলেন আছেন ফয়জুল্লাহ। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আমিনীর ছেলে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে ক্রমাগত চাপের কারণে ইসলামী ঐক্যজোট এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জোটের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করেছে।
গত মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি সমাবেশ করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। তবে বরাবর যেভাবে এ জাতীয় সমাবেশে বিএনপি জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মী যোগ দেয়, এবার তা দেখা যায়নি।
এরপর বুধবার রাতে ইসলামী ঐক্যজোটের মজলিসে শুরার সদস্যরা জরুরি বৈঠক করে। সেখানেই জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিশ্চিত করেন।
এরপর বৃহস্পতিবার দলের যে ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল হয় সেখানে বিএনপির কোনো নেতাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। শরিক দলগুলোর ইফতার ও জাতীয় সম্মেলনসহ বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সাধারণত বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা অতিথি হিসেবে থাকেন।