ফ্যাসিস্টবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে – সালাহউদ্দিন
এই দুর্যোগের সময়েও স্বাস্থ্যখাত দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে: ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক।
সরকারের উদাসীনতা ও অবহেলায় স্বাস্থ্য খাত একেবারেই ভেঙে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার জানেও না, অ্যাকজাক্টলি তারা কী করবে।
রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী হোমিওপ্যাথিক দলের উদ্যোগে ‘করোনাভাইরাস প্রতিষেধক ওষুধ বিতরণ’ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডা. আরিফুল হক মোল্লা। বিএনপি মহাসচিব ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হোন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত একেবারেই ভেঙে পড়েছে। আপনারা দেখে এসেছেন যে, আমরা আগে থেকেই অনেকবার বলেছি– স্বাস্থ্য খাতে সরকারের চরম অবহেলা করার কারণে, তাদের উদাসীনতার জন্য এবং কোভিড ১৯-এর আক্রমণের পর থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়ার কারণে এবং ভ্রান্ত নীতির কারণে আজকে বাংলাদেশে সবচেয়ে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখানে কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এখানে সরকারের তরফ থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতর আছে, তারা একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। স্থানীয় সরকারে যারা আছেন, তারাও একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম শনিবার বলেছেন যে, আর কালবিলম্ব না করে এখনই জোনভিত্তিক লকডাউনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লকডাউন দেয়ার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক দিন আগেই বলা হয়েছে দেশে রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রিন জোন করা হবে। ঢাকা শহরকে কতগুলো অঞ্চলে ভাগ করে রেড জোন চিহ্নিত করে লকডাউন দেয়া হবে। একমাত্র পূর্ব রাজাবাজার ছাড়া আর কোথাও এটি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আসলে আমার মনে হয় সরকার জানেও না যে অ্যাকজাক্টলি তারা কী করবেন? কী করতে চাচ্ছেন? এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর একটি গাইডলাইন দেবে সেটিও তারা দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলা করার জন্য যে একটা ম্যাপ, একটা রোডম্যাপ, একটা পরিকল্পনা, একটা প্রতিরোধ পরিকল্পনা তার সবটাই অনুপস্থিত এখানে। আমরা দেখেছি কয়েক দিন আগে চীনা বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন। তারা এসে একই কথা বলেছেন যে, বাংলাদেশে সব কিছু এলোমেলো। এখানে কোথায় রোগ আছে সেটিই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চিহ্নিত করতে পারছেন না এবং চিহ্নিত করার জন্য কোনো ব্যবস্থা তাদের নেই।
এসবের জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের দুর্ভাগ্যের কথা আমাদের সরকার প্রথম থেকেই এই বৈশ্বিক মহামারীকে উপেক্ষা করেছেন, অবহেলা করেছেন। এটির পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। পরে এটি যখন একটি মহামারী আকারে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া শুরু করেছে, তখন বাংলাদেশে এটি নিয়ে কিছুটা কথা বলা শুরু করেছে, কাজ করেছে।
‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই মুহূর্তে কোথাও অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি হাসপাতালগুলোতেও অক্সিজেন নেই। আর হাসপাতালে যে বেডগুলো করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য রাখা হয়েছে। সেই বেডগুলো নাকি খালি পরে আছে। কারণ মানুষ হাসপাতালে যেতে চাচ্ছে না, হাসপাতালের যে ব্যবস্থা তাতে কেউ আস্থা রাখতে পারছে না। বেশিরভাগ মানুষই ঘরের মধ্যে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই ঘরের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন’-যোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশের এই সময়েও দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আমাদের এই জাতির দুর্ভাগ্য যে এমন একটা সরকার এই দেশ শাসন করছে, যারা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। যাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। পার্লামেন্টে তারা যে বাজেট দিয়েছে সে বাজেটের আলোচনা হয়েছে মাত্র দুই-তিন দিন। বিএনপির যেসব সংসদ সদস্য রয়েছেন, তারা একটি ভার্চুয়াল সংসদ করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিন্তু সেটিও করা হয়নি।
‘বিরোধী দলের এমপিরা সংসদে বক্তব্য দিতে গেলে তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। এই চরম দুরাবস্থার মধ্যে সারাদেশের মানুষ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা কোনো দিকনির্দেশনা খুঁজে পাচ্ছে না। সরকারের ভুল নীতির কারণে সমগ্র দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে।’
আজকে জাতীয়তাবাদী হোমিওপ্যাথি দল বাংলাদেশের মানুষকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য যে এগিয়ে এসেছে, আমার তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। দেশের সব রাজনৈতিক দল, সব সংস্থাকে এগিয়ে এসে করোনা মোকাবেলায় কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, শুধু আমাদের দেশে নয়, পুরো বিশ্বে চিকিৎসাশাস্ত্রে হোমিওপ্যাথি একটি পুরনো চিকিৎসাব্যবস্থা। হোমিওপ্যাথি যারা চিকিৎসা করেন, তারা বিশ্বাস করেন যে হোমিওপ্যাথি হামলেস চিকিৎসাব্যবস্থা যা দ্বারা মানুষের ক্ষতি হয় না। এটিতে কোনো সাইট ইফেক্ট থাকে না। হোমিওপ্যাথি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কার্যকরী একটি চিকিৎসাব্যবস্থা। যারা এতে বিশ্বাস করেন, তারা নিশ্চয়ই এতে উপকৃত হবেন।
ডিএন/পিএন/জেএএ
							
    
												  	
																						
									
                    
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										