ফ্যাসিস্টবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে – সালাহউদ্দিন
নাজিব রাজাকের সাজা, বিপদের মুখে মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন জোট!
দেশনিউজ ডেস্ক।
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে আবারো টালমাটাল অবস্থা শুরু হচ্ছে। অর্থপাচারের মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ১২ বছরের সাজা হওয়ার পর মূলত এ অবস্থা শুরু হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক হলো নাজিব রাজাকের দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এইএমএনও)।
কিন্তু গত মঙ্গলবার নাজিব রাজাককে দুর্নীতির দায়ে ১২ বছরের জেল দেয়ার পরই বৃহস্পতিবার তার দল ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে তারা সরকারকে সমর্থন দেয়া অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে। যতই সরকারকে সমর্থন দেয়ার কথা বলুক ইউএমএনও, এর ফলে মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের প্রশাসনের স্থিতিশীলতায় বড় আঘাত লাগবে।
এ খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় ‘১ মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’ (১এমডিবি) তহবিল থেকে কয়েক শত কোটি ডলার আত্মসাৎ করার কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ইউএমএনও’র সাবেক প্রেসিডেন্ট নাজিব রাজাককে ১২ বছরের জেল ও জরিমানা করা হয়। স্পষ্টত এতে নাখোশ তার দল। মুখে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু না বললেও বুঝে নেয়া যায় এ কারণেই ক্ষমতাসীন সরকারের জোট ছাড়ছে ইউএমএনও।
প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের জোটে সবচেয়ে বড় অংশ হলো ইউএমএনও। সরকার টিকে থাকতে তাদের সমর্থন মুহিদ্দিনের জন্য অত্যাবশ্যক।
অন্যভাবে বলা যায়, সরকারকে বেঁচে থাকতে হলে তাদের সমর্থন প্রয়োজন। পার্লামেন্টে বর্তমানে ক্ষমতাসীন জোটের মাত্র দুটি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে।
যদি এ অবস্থায় সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে ইউএমএনও, তাহলে কুপোকাত হতে হবে মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে।
মাত্র ৫ মাস আগে রাজনীতির খেলায় হতাশাজনক এক পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এরপরই পারিকাতান ন্যাশনালের ব্যানারে মুহিদ্দিনের বারসাতু দলের সঙ্গে হাত মেলায় ইউএমএনও। ফলে নতুন সরকার গঠন করে তারা। এমন রাজনীতিকে পার্লামেন্টারি অভ্যুত্থান বলে আখ্যায়িত করা হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুহিদ্দিন ইয়াসিন তারই দলের বর্ষীয়ান নেতা মাহাথির মোহাম্মদকে নকআউট করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। নিজে হন প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু মঙ্গলবার নাজিব রাজাককে দেশটির আদালত ওই শাস্তি দেয়ার পর সেই আত্মবিশ্বাসে চির ধরেছে। তারই ফল হিসেবে পারিকাতান ন্যাশনাল জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউএমএনও।
তারা বলেছে, জোট ত্যাগ করলেও তারা ক্ষমতাসীন সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন অব্যাহতভাবে দিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার এ দলের প্রেসিডেন্ট আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেছেন, পারিকাতান ন্যাশনালের অংশ না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএমএনও। দলটি এখন মুয়াফাকাত ন্যাশনাল প্যাকের অধীনে ইসলামপন্থি পার্টি পিএএসের সঙ্গে অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করার দিকে দৃষ্টি দেবে।
ওদিকে মুয়াফাকাত প্যাকের অংশীদার হতে বারসাতু দলকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে মুহিদ্দিনের অফিস থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্যও পাওয়া যায় নি। নিরপেক্ষ পোলস্টার মেরদেকা সেন্টারের ইব্রাহিম সুফিয়ান বলেছেন, নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে যে রায় দেয়া হয়েছে তার প্রতিশোধ নিতেই জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত ইউএমএনও নিয়ে থাকবে বলে মনে হচ্ছে। যদিও নাজিব আর দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন না, তবু তিনি উচ্চ মাত্রায় প্রভাব বিস্তার করে আছেন।
ডিএন/আইএন/জেএএ/১০:৫০পিএম/৩০৭২০২০৩১

