ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের বিভেদ পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের লাভবান করবে – খেলাফত মজলিস
গর্ভপাত করাতে গিয়ে ‘চিকিৎসকের অবহেলায়’ নারীর মৃত্যু
বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশালে চিকিৎসকের অবহেলায় আবারও এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে নগরীর সদর রোড এলাকার বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে ওই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
মৃত রোগী শাহনাজ পারভীন (৪০) মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাসানচর এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম মিন্টুর স্ত্রী।
তরিকুল ইসলাম মিন্টু অভিযোগ করে বলেন, ‘স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের গাইনি সমস্যা ছিল। এ কারণে তার গর্ভধারণে সমস্যা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন পূর্বে তাকে ডাক্তার জি কে চক্রবর্তীর কাছে নিয়ে আসা হয়। এরপর তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করার পর গর্ভবতী হন শাহনাজ। এরপর প্রতিনিয়ত ডাক্তার জি কে চক্রবর্তীর ফলোআপে ছিল আমার স্ত্রী। ৫ তারিখে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হলে বাচ্চা ও মা ভালো আছেন বলে জানান ডাক্তার। পরবর্তীতে ১২ তারিখে আবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হলে সেই রিপোর্টে বাচ্চাকে মৃত বলে দেখানো হয়। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে আরও দুবার আল্ট্রাসনোগ্রাম টেস্ট করান এবং বাচ্চা মৃতের বিষয়টি নিশ্চিত হলে আমার স্ত্রীর গর্ভপাত করানোর জন্য বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’
তরিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, হাসপাতালে ভর্তির সময় স্ত্রী শাহনাজ পারভীন সুস্থ থাকলেও বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রোগীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এসব বিষয় নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে গেলে তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। রোগীর কাছে না গিয়ে চিকিৎসকরা নানানভাবে স্বজনদের ওপর চড়াও হন। এরপর সন্ধ্যায় গর্ভপাত করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলে কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসকরা জানান রোগী শাহনাজের মৃত্যু হয়েছে।
রোগীর স্বজনদের দাবি, যেখানে গর্ভপাত করা প্রয়োজন ছিল, সেখানে ৪-৫ ঘণ্টা আগে না নিয়ে রোগীর অবস্থা বেগতিক হওয়ার পর অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কালক্ষেপণ ও অবহেলায় এই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাদের। তারা এই ঘটনার বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাক্তার জি কে চক্রবর্তী বলেন, ‘চিকিৎসকদের অবহেলার কোনো বিষয় নেই। কারণ করোনার মধ্যেও আমিসহ সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসকরা প্রতিনিয়ত রোগীর খোঁজ নিয়েছি। ডায়াবেটিকসসহ নানা সমস্যা ছিল রোগীর। যেহেতু রোগী মারা গেছেন, এটা অবশ্যই দুঃখজনক বিষয়। আর ৫ তারিখের টেস্ট রিপোর্টে বাচ্চা ঠিক ছিল বলেই আমরা দেখেছি, তবে পানি কম থাকার কারণে রোগীকে আমিই হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেছি।’
বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘রোগী মৃত্যুর বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা চিকিৎসক, যাদের অবহেলায় দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নূরুল ইসলাম বলেন, ‘রোগী মৃত্যুর ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোডে অবস্থিত রয়েল সিটি হসপিটালে এক তরুণী একইভাবে চিকিৎসার অবহেলায় মারা যান। ওই ঘটনায় চার চিকিৎসকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিরা এখনো পলাতক রয়েছেন।
ডিএন/সিএন/জেএএ/১০:৪৭এএম/১৪৮২০২০২৭