• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

নির্যাতন : ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুই এএসআইকে প্রত্যাহার

Pulice-lekhaনিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন ও টাকা আদায়ের অভিযোগ তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। তাঁর নাম এমদাদুল হক। তিনি নগরের ইপিজেড থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। এছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা প্রলয় বৈদ্যকে নির্যাতনের অভিযোগে কাফরুল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলামকে ক্লোজ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগর পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল জলিলের নির্দেশে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ‘পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কশিমনার (বন্দর) জয়নাল আবেদীন বলেন, মো. সোলায়মান নামের এক ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ইপিজেড থানার এএসআই এমদাদুল হককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দামপাড়া পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন্দর থানাধীন কলসিদিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সোলায়মান। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাদাপোশাকধারী চার ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁর বাসায় যান। জরুরি কথা আছে বলে তাঁরা মোটরসাইকেলে করে তাঁকে ইপিজেডের পশ্চিমে বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে এএসআই এমদাদ তাঁকে বলেন, ‘তিন লাখ টাকা দিবি, নইলে ক্রসফায়ারে দেব।’ ঘণ্টা খানেক পর তাঁকে ইপিজেড থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই টাকা তাঁর এক আত্মীয় থানায় নিয়ে যান।

এদিকে, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা প্রলয় বৈদ্যকে নির্যাতনের অভিযোগে কাফরুল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলামকে ক্লোজ করা হয়েছে। গত ১৭ই জানুয়ারি পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার। ঘটনার তদন্ত শুরু করে মঙ্গলবার মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার কাইয়ূমুজ্জামান খানের কাছে প্রতিবেদন দেন পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার এডিএম জাকির হোসেন। তারপরই তাকে ক্লোজ করা হয়। পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার এডিএম জাকির হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তদন্তে এএসআই আমিনুলের ক্রুটি পাওয়া গেছে। আসামি আটক করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা অবগত করেননি। আসামি আটকের সময় তাকে সঠিকভাবে তল্লাশি করা হয়নি। এমনকি আসামিকে থানায় না নিয়ে গাড়িতে করে বিভিন্নস্থানে ঘুরানো হয়। এসব বিষয় তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা প্রলয় বৈদ্যকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠে কাফরুল থানার এএসআই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ১৭ই জানুয়ারি  সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ এর সি ব্লকের মুসলিম সুইটসের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কানে পৌঁছে যাওয়ায় রক্ষা পান ওই এনজিও কর্মকর্তা।
প্রলয় বৈদ্যর পিতা  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সাবেক সহকারী সচিব এস কে বৈদ্য। মিরপুরের-১৩ নম্বরের ৩২১ নম্বরের নিজ বাড়িতে মা-বাবা ও প্রলয়সহ চার ভাইয়ের পরিবার থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলা সদরের নতুনবাজারে। প্রলয় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হিসেব কর্মরত রয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email