নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র কেনার টাকা দিয়েছিল কাউন্সিলর মাকসুদ : সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর সসোনাগাজীর নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় ব্যবহৃত বোরকা, হিজাব, কেরোসিন ও দড়ি কেনার জন্য সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ টাকা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মোল্লা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলর মাকসুদ গ্রেফতার আসামি শাহদাত হোসেন ওরফে শামীমকে এসব জিনিসপত্র কেনার জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছিল। আর তাকে এই টাকা যোগান দেয় নুসরাত হত্যা মামলা প্রধান আসামি অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ্দৌলা।’

রবিবার ১২ মে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যার ঘটনায় কোনও মানি লন্ডারিং হয়েছে কিনা, তা নিয়ে আমরা তদন্ত করেছি। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, নুসরাত হত্যায় মানি লন্ডারিং হয়নি। অল্প কিছু টাকা লেনদেন হয়েছে, তবে তা মানি লন্ডারিংয়ের পর্যায়ে পড়ে না। তবে বিষয়টি আমরা আরও তদন্ত করে দেখছি।

সূত্র জনায়, এর আগে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সিআইডি। এ কমিটির প্রধান মো. ফারুক হোসেন ২৩ এপ্রিল সোনাগাজীতে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় অনুসন্ধান চালান। এই সময় সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নুসরাত হত্যায় কোনও মানি লন্ডারিং হয়েছে কিনা, তা বের করতেই সিআইডি ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেছে। মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির মামলাও দায়ের করা হবে।
প্রসঙ্গত, নিহত নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে।

নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম শ্রেণির আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার জোরালো অভিযোগ ওঠে। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

Print Friendly, PDF & Email