আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
ইসলামে চরমপন্থার কোন স্থান নেই: খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্মেলনে মহাসচিব
ঢাকা, দেশনিউজ.নেট: খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের পরিষ্কার মনে রাখতে হবে যে ইসলামে চরমপন্থার কোন স্থান নেই। প্রকৃত জেহাদের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। অতীতেও খারেজী সম্প্রদায় তাদের চরমপন্থার মাধ্যমে মুসলিম জাহানে প্রায় দু’শ বছরব্যাপী সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা –নৈরাজ্য সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। আজকের যুগেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের এসব ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
তিনি বলেন, দেশ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন। আজ ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সরকার। এখানে গণতন্ত্র আজ স্বৈরাচারের চাপে পিষ্ট। গণতন্ত্র আজ শাসক দলের অবাধ দুর্নীতি ও দখলদারীর নাম। গণতন্ত্র আজ নিজেদের মধ্যে পরস্পর হানাহানি আর বিরোধী দলের কর্মীদের ঠেঙ্গানোর নাম। গণতন্ত্র আজ জেল জুলুম ও পুলিশী গ্রেফতারী এবং হয়রানীর নাম। সর্বস্তরেই বিরাজ করছে অচলাবস্থা। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে। আজ দেশে কারো কোন নিরাপত্তা নেই। সর্বস্তরের মানুষ আতংকগ্রস্থ। ব্যবসায় বানিজ্য কার্যত: অচল। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামা যায় না। দেশ একটি ভয়াবহ পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মিডিয়ার কণ্ঠ চেপে ধরা হয়েছে। সর্বত্র বিরাজ করছে নিরাপত্তাহীনতা, হতাশা ও উদ্বেগ। এসব থেকে মানুষ মুক্তি চায়।’ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ ৪ ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে সংগঠনের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগর। অসুস্থ্যতার কারণে আমীরে মজলিস মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের অনুপস্থিতিতে তার পক্ষ থেকে প্রদত্ত লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের নায়েবে আমীর ও সম্মেলনের বিশেষ অতিথি মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান।
শাখা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ শফিক উদ্দিন, এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, অধ্যাপক এম কে জামান, ডেমোক্রেটিক লীগ সেক্রেটারী সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, হেফাজত ইসলাম ঢাকা মহানগরীর যুগ্মআহ্বায়ক মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, সাবেক সহকারী এ্যাটোর্নি জেনারেল মো: রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুুহাম্মদ মুনতাসির আলী, সোহাইল আহমদ, অধ্যাপক আবদুল হালিম, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, এডভোকেট মিজানুর রহমান, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, হাফেজ মাওলানা জিন্নাত আলী, ডাঃ রিফাত হোসেন মালিক, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, শ্রমিক নেতা নূর হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল হাফিজ খসরু, অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, কাজী আরিফুর রহমান, মুন্সী মোস্তাফিজুর রহমান, ইলিয়াস আহমদ, মুফতি ইয়াহিয়া নোমানী, মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আবু ইউসুফ, মাওলানা সরদার নেয়ামত উল্লাহ প্রমুখ।
এ সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার চেয়ারম্যান ও হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেবে প্রেরিত বাণী পড়ে শুনান শেখ গোলাম আসগর।
সম্মেলনে- সন্ত্রাসী হামলা ও বিশ্বজুড়ে মুসলিম নিপীড়ন প্রসঙ্গ, নারী -শিশু নির্যাতন ও অবমাননা প্রসঙ্গ, ঢাকা বাসীর ভোগান্তি ও জনদুর্ভোগ এবং সংকটময় জাতীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে ৪ টি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নায়েবে আমীর সৈয়দ মজিবুর রহমান বলেন, মুসলমানরা জীবনের চেয়েও দ্বীন ও ঈমানকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত আসলে মুসলমানরা তা কোনক্রমেই সহ্য করবে না।
সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা শফিক উদ্দিন বলেন, খেলাফত মজলিসকে একটি গণ-সংগঠনে পরিনত করার জন্যে রাজধানীতে সংগঠন মজবুত করতে হবে। সর্বস্তরের মানুষের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌছে দিতে হবে। ময়দানে বলিষ্ঠতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, দেশে আজ একটি স্বনির্বাচিত সরকার চেপে বসেছে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক এম.কে জামান বলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপালের সাথে ভারত যে আচরণ করছে তা অত্যন্ত অমানবিক। সেখানে শিশুদের দুধ, খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানী তেল পর্যন্ত আটকে দেয়া হয়েছে। নেপালকে বশে আনার জন্যে ভারতের আরোপিত অবরোধ থেকে এদেশের মানুষকে সাবধান হওয়া দরকার।
সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী সরকার বাংলাদেশের সম্পদ লুন্ঠনের জন্যে বিশেষ টার্গেট নিয়ে কাজ করছে। দেশের প্রতিরোধ শক্তিকে দুর্বল করে দেয়ার জন্যে জনগণের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সম্মেলনে আগামী ১৬ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন, ৩-১৭ জানুয়ারী গণসংযোগ কর্মসূচী এবং ফেব্রুয়ারী মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে পালনের কর্মসূচী ঘোষনা করেন মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগর।