বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে আইসিইউ সাপোর্ট না পেয়ে মৃত্যুর কোলে দুদক কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

তিনি দুদকের প্রধান সহকারী । করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর তিনি চিকিৎসার জন্য কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা পাননি। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে ইবনে সিনা হাসপাতাল কল্যাণপুর শাখায় গিয়ে আইসিইউ খালি পাননি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেও ভাগ্যে আইসিইউ জুটেনি। শেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন দুদক কর্মরত এই হতভাগ্য সরকারি কর্মকর্তা।

তার নাম মো. খলিলুর রহমান (৫৭)। তিনি দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত সেল-২ এর প্রধান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শনিবার দুপুর ১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর তিনি যথাযথ চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, আমরা পরপর দুজন দক্ষ কর্মকর্তাকে হারালাম। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি রইল সমবেনা।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুদকের পরিচালক (প্রশাসন) জালাল সাইফুর রহমান মারা যান। তার স্ত্রী সন্তানও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তারা এখন সুস্থ।

খলিলুর রহমানের অসুস্থতার বিষয়ে দুদকের একজন দায়িত্বশীল উপ-পরিচালক বলেন, তিনি ১০-১২ দিন আগে অসুস্থ হন। করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তিনি শিশু হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করেন। কয়েকদিন পর রিপোর্ট আসে পজিটিভ। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য কয়েকটি হাসপাতালে চেষ্টা করেন। কিন্তু কোথাও তিনি চিকিৎসা পাননি। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে পরশু তিনি ইবনে সিনা হাসপাতাল কল্যাণপুর শাখায় তাকে নিয়ে গেলে আইসিও’র ব্যবস্থা হয়নি। সিটও পাওয়া যায়নি। তাকে ওই হাসপাতালের আউটডোরে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ঢাকা মেডিকেলেও তাকে আইসিও সাপোর্ট দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ আরেকটু আন্তরিক হলে হয়তো তিনি আইসিও সাপোর্ট পেতেন।

তিন মাস আগে তার হার্টে রিং পড়ানো হয়। এরপর তিনি সুস্থই ছিলেন। তিনি সরকারি ছুটির ভেতর বাসা থেকে বের হননি। তারপরও কীভাবে আক্রান্ত হলেন মনে করতে পারছেন তা তার পরিবারের সদস্যরা।

তার এক বোন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জানান, তাদের বাড়ি ঝালকাঠির কাঠালিয়ায়। গ্রামের বাড়িতেই তার ভাইকে জানাজা শেষে কবর দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email