শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

এভাবে সরকারের অর্থ অপচয় আর কত?

মৎস্য অধিদপ্তরের দুটি জাহাজ অকেজো ঘোষণার পরও এক যুগ ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে অধিদপ্তরকে প্রতিবছর গচ্চা দিতে হচ্ছে ২৪ লাখ টাকার বেশি। এ ছাড়া ফেলে রাখায় জাহাজ দুটির মূল্যও কমছে।

শীর্ষ  দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মৎস্য অধিদপ্তরের আওতাধীন চট্টগ্রামের সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের অকেজো দুটি জাহাজ হলো আরভি অনুসন্ধানী ও আরভি মাছরাঙা। সাগরে মাছ জরিপ করার কাজে একসময় ব্যবহৃত হলেও ২০০১ থেকে অনুসন্ধানী ও ১৯৯৭ সাল থেকে মাছরাঙা আর ব্যবহার করা হয়নি। ২০১০ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জাহাজ দুটিকে অকেজো ঘোষণা করে ও নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করতে বলে।

কয়েক দফা দরপত্র আহ্বানের পর অনুসন্ধানী ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় ও মাছরাঙা ৪৫ লাখ টাকায় কিনে নেয় দুটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিক্রি চূড়ান্ত হওয়ার পর জাহাজ দুটি দিয়ে মাছ ধরা যাবে না—এমন শর্ত জুড়ে দেয় মন্ত্রণালয়। এতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান দুটি। অকেজো জাহাজ দুটি সংরক্ষণে গত দুই বছরে চট্টগ্রাম মৎস্যবন্দরকে প্রায় ২৪ লাখ টাকা দিতে হয়েছে অধিদপ্তরের। এ ছাড়া ভ্যাট বাবদ দুই লাখ ও আয়কর বাবদ আরও এক লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ সংরক্ষণের জায়গায় নিয়মিতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন ১১ জন ডেকহ্যান্ড শ্রমিক ও ৩ জন স্থায়ী কর্মচারী। গত দুই বছরে দৈনিক ৫৭৫ টাকা হারে ১১ জন শ্রমিকের পেছনে ৪ লাখ টাকার বেশি এবং স্থায়ী ৩ কর্মচারীকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও গাফিলতিতে দেশে নানাভাবে সরকারি অর্থের অপচয় যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। জবাবদিহি না থাকা এর বড় কারণ। প্রশ্ন হলো, যে জাহাজ দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত হয় না এবং ১২ বছর আগে অকেজো ঘোষণা করা হয়েছে, সেই জাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে বছরে কেন ২৪ লাখ টাকা গচ্চা দেওয়া হচ্ছে? অকেজো জাহাজ বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যাবে, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুই বছরেই তার তিন ভাগের এক ভাগ টাকা ব্যয় হয়েছে। এক যুগের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ যোগ করলে অপচয়ের অঙ্কটা কোথায় দাঁড়াবে?

উচ্চ আদালতে চলমান মামলা দুটি দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ মৎস্য অধিদপ্তরকে নিতে হবে। এভাবে সরকারের অর্থ অপচয় আর কত?