• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সাধারণ মানুষ বাঁচবে কী করে?

বাজেট

এই ভরা মৌসুমে চালের দাম কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। দাবি করা হয়- চালে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঘাটতির কথা স্বীকার করা হয় না সরকারি তরফে। আবার লাখ লাখ টন আমদানিও হয়। বড় প্রশ্ন হচ্ছে- ভরা মওসুমে কেন মূল্য বৃদ্ধি? তবে কি বিশ্ববাজারের অস্থিরতা দেখে এখনই মজুতদারদের কারসাজি শুরু হয়ে গেছে?

একেবারে হতদরিদ্র শ্রেণির তাও একটা ভরসা ছিল—টিসিবি।  কিন্তু সেটাও এখন বন্ধ। বাজেটে টিসিবির ১০ টাকার চাল ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকিরা? দুই বছরের করোনার ধকল, তার ওপর জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে—কত দিন টিকে থাকতে পারবে আমাদের মধ্যবিত্তসহ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো?

এই লেখা যখন লিখছি, তখন মুদিদোকানের হিসাব সামনে। দীর্ঘ দিন ধরে মুদি দোকান থেকে মাসিক বাকিতে বাজার করি। আগে মুূি মালের মাসিক বিল হতো ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এখন তা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

বলা হয়ে থাকে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির শুরুটা হয়েছে মহামারি করোনাকালে এবং বর্তমানে এর চলিত রূপ স্থায়ী হতে চলার নিয়ামক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ধরে নিচ্ছি দুটোই সত্যি এবং এর কোনোটির ওপরই আমাদের হাত নেই। একটি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত সংকট, অপরটি মনুষ্য সৃষ্টি।

কিন্তু তাই বলে আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্যে এবং যেগুলোতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেগুলোর দাম কেন বাড়বে? শুরুতেই বলেছি, চাল তো কোথাও থেকে উচ্চমূল্যে আমদানি করা হয়নি বা আগামী আট-দশ মাসের মধ্যে আমদানি করা অত্যাবশ্যক হবে না। যদি করে তা বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বা দুর্যোগ মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এবং এটি প্রতিবছরই সরকার করে থাকে। শুধু কি চাল? দেশে উৎপাদিত লবণ, মাছ, মুরগি, সবজি, ডিম, মৌসুমি ফল, খাতা, কলম, পেনসিল, ওষুধপত্র, চা, তৈরি পোশাক—এগুলোর দামও তো পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে। চিনি, তেল, পেঁয়াজ বাদই দিলাম। সবচেয়ে কম দামের একটি গোসলের সাবানের দাম ষাট টাকা।

এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং বাজেটে করজাল যেভাবে বিস্তৃত করার কথা বলা হয়েছে তা কার্যকর হলে জীবনযাত্রার ব্যয়ে আরেক দফা উল্লম্ফন হবে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বাঁচবে কি করে?

 

Print Friendly, PDF & Email