আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
কনস্যুলেট অফিস নিয়ে অস্থির লস এঞ্জেলেস: নেপথ্যে স্টেট আ’লীগের কোন্দল
নিজস্ব প্রতিবেদক (ক্যালিফোর্নিয়া) :
লস এঞ্জেলের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ নিয়ে অস্থির লস এঞ্জেলেসের প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি। এক পক্ষের অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে নাকি কমিউনিটির একটি ক্ষুদ্র অংশ কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে সরানোর এক হীন প্রচেষ্টায় মেতেছে। অন্য পক্ষের অভিযোগ, কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা লস এঞ্জেলেসের সরকারবিরোধী কয়েকজন কমিউনিটি নেতার সাথে আতাত করে সরকারবিরোধী কার্যক্রম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নেতৃবৃন্দকে কনস্যুলেটে অফিসে কোনঠসা করে ফেলেছেন। তাই প্রিয়তোষ সাহার দ্রুত অপসারণ চেয়ে একটি পিটিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় পর্যন্ত পৌছানো হয়েছে।সপয়তোষ সাহার স্বপক্ষের গ্রুপটির পাল্টা অভিযোগ- ওই পিটিশনের সকল তথ্যই নাকি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যে ভরপুর।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়েই এই পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই ক্যালিফোর্নিয়া আওয়ামীলীগ ৫ টুকরায় বিভক্ত। এই পাচ ভাগের মধ্যে আবার কেন্দ্রের অনুমোদন প্রাপ্ত প্রধান অংশটির সভাপতি শফিকুর রহমান উ সেক্রেটারি ডা: রবি আলমের রয়েছে স্ব স্ব গ্রুপ। বছরখানে পূর্বে ক্যালিফোর্নিয়া যুবলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সেক্রেটারি গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য আকার ধারন করে। এই দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতেই ক্যালিফোর্নিয়া আওয়ামী যুবলীগের দুইটি কমিটি হয়, যার প্রধান অংশটির নেতৃত্বে রয়েছেন কামরুল হাসান-সোহেল আহমেদ, আজিজ মোহাম্মাদ হাই প্রমুখ। অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন সুবর্ণ নন্দী তাপস, সাইফুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
জানা গেছে, অরাজনৈতিক ব্যক্তি ডা: রবি আলম সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনির ঘনিষ্ঠতার সুবাদে হঠাৎ করেই ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদে অভিষিক্ত হন। অপরদিকে কনস্যুলেট জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা চাঁদপুরের ডিসি থাকাকালীন ডা: দিপু মনির সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। অত:পর সেখান থেকে তিনি ডা: দিপু মনির পিএস হন। ডা: দিপু মনির মাধ্যমেই প্রিয়তোষ সাহা প্রশাসন ক্যাডার থেকে ডেপুটেশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে নিযুক্তি হন। অত:পর লস এঞ্জেলেসের কনস্যুলেট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। ড: রবি আলম ও প্রিয়তোষ সাহা দুজনেই দিপু মণির লোক হিসেবে প্রথম দিকে দুজনের মাঝে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু আওয়ামীলীগের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে অপরাপর গ্রুপও যখন বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে এবং প্রিয়তোষ সাহা আওয়ামীলীগ প্রেসিডেন্ট শফিকুর রহমানের দিকে ঝুকে পড়লে ড: রবি আলমের একাধিপত্য খর্ব হয়। এজন্য কনস্যুলেট জেলারেলের উপরে ডা: রবি আলম গ্রুপ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সাম্প্রতিক প্রতিটি অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশ কনস্যুলেট কর্তৃক আয়োজিত গত ২১শে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে এই গ্রুপিং নিয়ে অশ্রাব্য গালিগালাজ ও হাতাহাতিও হয়ে যায়, যার ভিডিও ইমেইল ও ফেসবুকে ভাইরাল হলে লস এঞ্জেলেস কমিউনিটি তথা সমগ্র আমেরিকাতে আওয়ামীলীগের পাশাপাশি বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসও প্রচণ্ডরকম নিন্দিত হয়।
এর আগে গতবছর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্য আওয়ামীলীগের ব্যানারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে সংবর্ধনা দেয়া সম্ভব না হওয়ায় সিলেটি কমিউনিটির পক্ষ থেকে ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশনের’ ব্যানারে সংবর্ধনা দেয়া হলে মন্ত্রী মহোদয়ের সামনেই দফায় দফায় সংঘর্ষের ফলে অনুষ্ঠান সংক্ষেপ করে সিকিউরিটি পাহারায় মন্ত্রী প্রস্থান করেন।
এই নিয়েও প্রবাসী লস এঞ্জেলেস কমিউনিটিতে আওয়ামীলীগ প্রচণ্ডভাবে নিন্দিত হয় এবং বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আওয়ামীলীগের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দলীয় ব্যানারে অর্থমন্ত্রীর সংবর্ধনা না হওয়ার জন্য ডা: রবি আলমের গ্রুপ কনস্যুলেট জেনারালেকেই দুষছেন।
অন্যদিকে সভাপতি গ্রুপের কেউকেউ বলছেন, কনস্যুলেট অফিসের অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ সভাপতি শফিকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন প্রধান অংশটির সাথে আধিপত্য বিস্তারে কুলিয়ে উঠতে না পারাতেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে অপসারণের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে লেগেছে ড: রবি আলমের গ্রুপটি। রবি আলমের গ্রুপটির নেপথ্য পরামর্শদাতার ভূমিকায় নাকি জনৈক কমিউনিটি নেতা যিনি কমিউনিটির কাগজপত্রহীন অসহায় মানুষকে আইনি সহায়তা দেয়ার ব্যবসা করেন। সাবেক সিটি কমিশনার ওই নেতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীনকেও নাকি আইনি সহায়তা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি তার ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি হতে প্রিয়তোষ সাহা অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। সে জন্য নাকি ঐ লোক প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন ও ঘনিষ্ঠজনের নিকটে কনসাল জেনারেলকে দেখে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তার পরামর্শ ও গোপন সহযোগিতায় কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে বিতাড়নের উদ্দেশ্যে বেছে নেয়া হয় লস এঞ্জেলেসের কয়েকজন সরকারবিরোধী সুপরিচিত কমিউনিটি নেতার সাথে কনসাল জেনারেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ছবি। ওই ছবি ব্যবহার করেই নাকি সরকারবিরোধী উক্ত নেতাদের সাথে কনসাল জেনারেলের দহরম মহরম সম্পর্কের গল্প সাজানো হয়।
জানা গেছ, ছবিতে উল্লেখিত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ আওয়ামী বিরোধী হলেও নিঃস্বার্থ ও নিবেদিত সামাজিক কার্যক্রমের জন্য কমিউনিটিতে ব্যাপক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। এই প্রতিনিধির অনুসন্ধানেও এই অভিযোগের কিছু সত্যতা পাওয়া গিয়াছে।
আওয়ামী বিরোধীদের সাথে প্রিয়তোষ সাহার সখ্যতার বিষয়টি পুরাই ভিত্তিহীন। দেখা যাচ্ছে, প্রিয়তোষ সাহার অপসারণ চেয়ে দায়েরকৃত পিটিশনে ব্যবহৃত ছবিতে এক নেতার নাম ফয়সাল আহমেদ তুহীন, যিনি বছর দুই পূর্বে লস এঞ্জেলেস সিটি নেইবাহুড কাউন্সিল মেম্বার নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ৭ মে তুহীন, জেরীন ইসলাম পাচজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতর প্রথমবারের মত সিটি নেইবাহুড কাউন্সিল মেম্বার নির্বাচিত হওয়াটা ছিলো আমেরিকার বুকে বাংলাদেশী কমিউনিটি তথা বাংলাদেশের জন্য বড় বিজয়। অথচ একদলীয় দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে এই বিজয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ছিলো পুরাপুরি নির্বিকার। এমনকি নির্বাচিতদের এপ্রিসিয়েশন করা দূরের কথা, প্রিয়তোষ সাহার সময়ে এদেরকে কনস্যুলেট অফিসের কোনো অনুষ্ঠানে ফর্মাল দাওয়াতও দেয়া হয় না। অথচ অপরাপর সকল কনসাল জেনারেলের পক্ষ থেকে তারা নিয়মিত দাওয়াত পেয়ে এসেছিলো।
এজন্য কাউন্সিল মেম্বার ফয়সাল আহমেদ তুহীনসহ অসংখ্য কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উপর ক্ষুব্ধ। কনসাল জেনারেলের সাথে তুহীনের সম্পর্কের বৈরিতা থাকলেও কমিউনিটির অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানের সম্মিলিত ছবি ব্যবহার করে দুজনার সাথে সুসম্পর্ক দেখানোর চেষ্টার করা হয়েছে।
ফয়সাল আহমেদ তুহীনের সাথে কনসাল জেনারেলের সম্পর্কের মিথ্যাচারিতার প্রমান মেলে তুহীনের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে (যার স্ক্রিন শট আমাদের হাতে রয়েছে)।
কনস্যুলেট অফিস কর্তৃক আয়োজিত গত ২১ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানের গণ্ডগোলের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফয়সাল আহমেদ তুহীন কনস্যুলেট জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে ‘অথর্ব কলসাল জেনারেল’ উল্লেখ করে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ও তার কূটনৈতিক দূরদর্শীতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওই স্ট্যাটাস ফয়সাল আহমেদ তুহীনের সাথে কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহার সুসম্পর্কের স্বাক্ষর বহন করেনা।
এই প্রতিনিধির সাথে ফয়সাল আহমেদ তুহীনের কথা হলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানালেন, ‘ভাবতে অবাক লাগে যে, আমেরিকার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কনস্যুলেট অফিসে ফরেন ক্যাডারের কোনো কর্মকর্তা নেই! কলসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা স্বপদে থাক বা না থাক তাতে গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া কমিউনিটির কারো কিচ্ছু আসে যায় না। কিন্তু যারা তার সাথে আমার মিথ্যা সুসম্পর্কের গল্প তৈরি করেছে ও আমর আত্মপরিচয় নিয়ে মিথ্যাচার করেছে তারা কমিউনিটির আইসোলেটেড পিপল’।
ঠিক একই ভাবে কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে কমিউনিটি লিডার ও মুসলিম উম্মাহর নেতা আনিসুর রহমান ও সিটি কমিশনার মারুফ ইসলামের কমিউনিটি ইভেন্টের ছবি ব্যবহার করে। তাদের সাথে কনসাল জেনারেলের সুসম্পর্কের মিথ্যা গল্প ফাঁদা হয়েছে। এই প্রতিবেদক এব্যাপারে কমিশনার মারুফ ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,
‘কিছু আইসোলেটেড পিপল দীর্ঘদিন থেকেই এমন মিথ্যাচার করে আসছে। এ নিয়ে কমিউনিটির মানুষ বিভ্রান্ত নয়। এসকল মিথ্যাচারে কান দেয়ার সময় আমার নেই’।
কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ পত্রে ব্যবহৃত একটি ছবি হচ্ছে ক্রিকেট খেলার ট্রফি বিতরণ নিয়ে, যেখানে একই মঞ্চে অধিষ্ঠিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন, মুনা প্রেসিডেন্ট আনিসুর রহমান, পুলিশ কমিশনার মারুফ ইসলাম, নেইবারহুড কাউন্সিল মেম্বার ফয়সাল আহমেদ তুহীন, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
জানা যায় যে, ‘এল.এ বাংলা ইউনিক ক্লাব’ লস এঞ্জেলেসে প্রতিবছর সামার ক্রিকেট লীগসহ বছরে কয়েকবার আন্ত ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকে। গত বছরও এমনি সামার ক্রিকেট লীগ-২০১৭’র কার্যক্রম শুরু করে সামারের তিন মাস আগে থেকেই।
এল এ বাংলা ইউনিক ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও ক্যালিফোর্নিয়া যুবলীগ নেতা আজিজ মোহাম্মাদ হাই জানালেন, ‘ইভেন্ট ডেটের তিনমাস আগেই কনস্যুলেট জেনারেল প্রিয়তোষ সাহাকে প্রধান অতিথি হিসেবে দাওয়াত করি এবং তিনি দাওয়াত কনফার্ম করেন। অরাজনৈতিক এই ক্রিড়া ক্লাবের পক্ষ থেকেই মঞ্চে উপবিষ্ট নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো।’
এল এ বাংলা ইউনিক ক্লাবের কর্মকর্তা ও টিম লিডার রুবেল আহমেদ জানালেন, লস এঞ্জেলেসের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার মমিনুল হক বাচ্চু ভাইয়ের জন্যই আমরা মেঘ না চাইতেই জলের মত রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দীন সাহেবকে পেয়ে যাই।
এম্বাসেডর জিয়াউদ্দীন সাহেবের ডিসি ফেরার তাড়া থাকায় নিকটেই অনুষ্ঠিত শেখ কামাল স্মৃতি টুর্নামেন্টের ট্রফি বিতরণ দ্রুত সমাপ্ত করলে বাচ্চু ভাই অতি অল্প সময়ের জন্য তাকে আমাদের মঞ্চে নিয়ে আসেন এবং তাড়াহুড়া করে ট্রফি বিতরণ করে চলে যান। এই নিয়ে ভুল বোঝানোর অবকাশ নেই।
এদিকে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে খোজ খবর নিয়ে নেইবারহুড কাউন্সিল ফয়সাল আহমেদ তুহীনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। জানা যায় কনস্যুলেটের ক্যাডারভুক্ত প্রধান ৫ পদস্থ কর্মকর্তার মধ্যে ফরেন মিনিস্ট্রির কোনো কর্মকর্তা নেই।
গোপন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, ফরেন ক্যাডার থেকে আগত ডেপুটি কনসাল আনার কলিকে গতবছর পরিকল্পিত ভাবে সরানো হয়েছে। আনার কলি ইউএসএ এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল শর্ত পূর্ণ করেই দেশ থেকে গৃহভৃত্য এনেছিলেন এবং চুক্তির মেয়াদ শেষের পরে দাপ্তরিক নোটিশও করেছিলেন। অথচ কনস্যুলেট জেনারেল প্রিয়তোষ সাহার ঘনিষ্ঠ এক সাংবাদিকের যোগসাজশে মিডিয়াতে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে তাকে সরানো হয়।
ধারনা করা হয়, এর কিছুদিন আগে একমাত্র ফরেন ক্যাডার থেকে আসা কূটনৈতিক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কনসাল সদীপ্ত আলমকে সরানো হয়েছিলো ফরেন ক্যাডারশূন্য করে একক কর্তৃত্বের অভিপ্রায় থেকেই।
এদিকে পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ফিরোজ ফাখরী’র সাথে কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহার রয়েছে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। এই নিয়ে কমিউনিটিতে বেশ কানাঘুষা ও রসালো আলোচনা চলে। ফিরোজ ফাখরী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত আমেরিকান।
পাকিস্তানী কমিউনিটিতে তার গতিবিধি তেমন না মিললেও বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেক অনুষ্ঠানে তিনি সরব। ভাঙা ভাঙা বাংলায় পারদর্শী ফিরোজ ফাখরী বাংলাদেশ কমিউনিটিতে এক রহস্যময় পুরুষ। শোনা যাচ্ছে তিনি কমিউনিটির কিছু নেতৃবৃন্দের অনুষ্ঠানে ভালো ডোনেট করে থকেন। অনেকেই তাকে একটি দেশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার লোক মনে করেন।
প্রিয়তোষ সাহাকে নিয়ে লস এঞ্জেলেসে অসন্তোষের যেন শেষ নেই! সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত হয়েও তার সাথে লস এঞ্জেলেসের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ ও সম্মিলিত পূজা উৎসব কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলছে। তার অপসারনে পূজা কমিটি ও ঐক্য পরিষদ নেতা সুবর্ণ নন্দি তাপস বেশ সরব ভূমিকায় আছেন।
এসকল অভিযোগের ব্যাপারে প্রিয়তোষ সাহার মতামতের জন্য কনস্যুলেট অফিসে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে , এসকল অভিযোগে ক্ষতবিক্ষত কলসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা ক্যালিফোর্নিয়া প্রবাসী ৯০ দশকের ঢাবি ছাত্রলীগ ক্যাডার ও ফেসবুক এক্টিভিস্ট ফিরোজ আলম, আওয়ামীলীগ সভাপতি শফিকুর রহমান ও দুজন সাংবাদিকের চেষ্টা তদবিরের উপরে ভর করে স্ব পদে টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ভাইস কনসাল আল মামুনের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছেন কমিউনিটির আওয়ামী লীগেরই কিছু ব্যক্তি, আর এর নেপথ্যেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও স্বার্থহীন।
কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহার একঘেয়েমি কার্যক্রম ও হঠকারী সিদ্ধান্তে
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সুষ্ঠু পরিবেশ আজ পুরাপুরি নির্বাসিত। প্রতিনিয়ত নানাবিধ ঘটনাপ্রবাহ ও কূটনৈতিক অদূরদর্শি কার্যক্রমের জন্য প্রবাসী লস এঞ্জেলেসের বাংলাদেশী কমিউনিটি কনস্যুলেট অফিসের উপরে ক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ। তাহারা এই সকল বিষয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে ক্ষতিয়ে দেখার আহবান জানান।