শিরোনাম :

  • মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

২৫ রমাযানের মধ্যে বোনাসসহ শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের দাবি গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেছেন, করোনা নামক মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী শিল্পোৎপাদনে ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। ফলে দেশের প্রায় ৬/৭ কোটি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শ্রমিকগণ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে।
গার্মেন্টস শিল্প অর্থনীতির চালিকাশক্তি বলা হলেও গার্মেন্টস শিল্প মানসম্মত উৎপাদনে ব্যর্থ হয়। ফলে বৈদেশিক রফতানী আয়ে ধ্বস নামে।

তিনি বলেন, গার্মেন্টস খোলা এবং বন্ধ নিয়ে যে নাটকীয় খেলা হয়েছে তাতে অনেক গার্মেন্টস শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসব কারণে যে সকল গার্মেন্টস শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

আজ শনিবার বিকেল ৩টায় পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত উপস্থিত হয়ে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

এতে লিখেত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন। উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মোশাররফ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে ৯দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে :
১। গার্মেন্টস শ্রমিকদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য ও কাজের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে ভালো খাবারের প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে ৫০,০০,০০০( পঞ্চাশ লক্ষ) রেশনিং কার্ড বরাদ্দ করতে হবে। ২। স্বাস্থ্য বিধি মোতাবেক শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ৩। ঈদের পূর্বে ২৫ রমাযানের মধ্যে শ্রমিকের সকল পাওনাসহ ঈদ বোনাস দিতে হবে। ৪। করোনার কারণে বন্ধকালীন সময়ে সকল গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১০০% বেতন দিতে হবে। ৫। গার্মেন্টস শিল্পের কোন শ্রমিক ছাটাই করা যাবে না। ৬। গার্মেন্টস শিল্প লে-অফ করা যাবে না। ৭। গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য সল্পমূল্যে বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসাসহ সকল ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সকল গার্মেন্টস জোন এবং ইপিজেডসমূহে বিশেষ চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তুলে শ্রমিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি চারমাস অন্তর মেডিক্যাল চেক-আপের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। সকল গার্মেন্টেসে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ইসলামী শ্রমনীতি হল মালিক ও শ্রমিকের সৌভাগ্যের পরশমণি। ইসলামী শ্রমনীতি এমন এক শ্রমনীতি- যাতে মালিক ও শ্রমিক উভয়ই লাভবান হয়। ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন হলে- কোনদিন গার্মেন্টস সেক্টরে মালিক শ্রমিকের মধ্যে কোন দ্বন্ধ বাধবে না। গার্মেন্টসে উৎপাদন দ্বিগুন/তিনগুন বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদন বাড়লে মালিকেরও লাভ হবে এবং এর ফলশ্রুতিতে শ্রমিকেরও বেতন বৃদ্ধিপাবে। শ্রমিকগণ মনের আনন্দে নিরলসভাবে নিজের কাজ মনে করে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একটি কথা প্রচলিত আছে, -“শ্রমিকদের বঞ্চিত রেখে সঠিক উন্নয়ন হয়না দেশে”, “দেশের উন্নয়ন যদি দেখতে চাও শ্রমিকদের অধিকার ফিরিয়ে দাও”। দেশে প্রায় ৫০লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিক তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে তাদের এত অবদান থাকা সত্তে¡ও তারা পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছেন, শোষিত হচ্ছেন। যে কোনো মূহুর্তে চাকুরী হারানোর ভয়ে তারা আতংকিত হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।