আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
নিজামীর ফাঁসি আপিলেও বহাল
নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায়ের সংক্ষিপ্তসার ঘোষণা করেন।
এই বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগের মধ্যে আপিল বিভাগ ২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে। ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে দেয়া যাবজ্জীবনও বহাল রাখা হয়েছে।
তবে ১ ও ৩ নম্বর অভিযোগে নিজামীকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া যাবজ্জীবনের পরিবর্তে আপিল বিভাগ খালাসের রায় দিয়েছে। আর ৪ নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মাওলানা নিজামীর আপিলের রায় হলো জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পঞ্চম রায়। অপর চারটি রায় হয়েছে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, দুই সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে।
এদের মধ্যে রায় বহাল থাকায় মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে, নিজামীর রায় ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বুধবার ভোর থেকে সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অবস্থান নেয়।
এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে একই বেঞ্চ নিজামীর মামলায় রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিল।
আদালতে নিজামীর আবেদনের পক্ষে তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, আর রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ২৩ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেন নিজামী। ৬,২৫২ পৃষ্ঠার আপিলে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চান তিনি। মোট ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে এ আপিল করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট এক আবেদনে ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এখন যা হবে
নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিমকোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠাবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ।
পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারবে।