সবার চোখ আপীল বিভাগের দিকে

মীর কাশেমআদালত প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকার শুরুতেই রাখা হয়েছে মীর কাসেম আলীর মামলার রায় ঘোষণা।
মীর কাসেমের আবেদনের রায় নিয়ে তিন দিন ধরে বিতর্ক চলছে। গত শনি ও রোববার খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দাবি করেন, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে ছাড়া নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের মামলাটি পুনঃশুনানি করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেছেন।
মন্ত্রীদের এসব বক্তব্যকে অসাংবিধানিক বলছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বিচারাধীন মামলা নিয়ে মন্ত্রীদের এ ধরনের মন্তব্য নিয়ে কয়েকজন আইনজ্ঞ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বিতর্কের মধ্যেই মীর কাসেমের রায় কী হয়, তা জানতে আজ সবার দৃষ্টি সর্বোচ্চ আদালতের দিকে। প্রধান বিচারপতি মামলার তদন্ত ও সাক্ষ-প্রমানে দুর্বলতার কথা বলেছেন প্রকাশ্য আদালতে। প্রসিকিউশনের তীব্র সমালোচনাও করেছেন। সে প্রেক্ষিতে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন-মীর কাশিমকে সাজা দেয়ার সুযোগ নেই। প্রশ্ন উঠেছে-তা হলে কি মীর কাশেম আলী খালাস পাচ্ছেন?
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানি হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য করা হয়।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর। মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মোট ১৪টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ১০টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। তার একটিতে মীর কাসেম আলীকে সর্বসম্মতভাবে ও আরেকটি অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দেন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। অপর আটটি অভিযোগে মীর কাসেম আলীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
১৯৭১ সালের ৮ নভেম্বর থেকে স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত চট্টগ্রামের মহামায়া ডালিম হোটেলে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী লোকজনকে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে নির্যাতন ও কয়েকজনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। মামলায় মীর কাসেম আলীর পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর ও অন্যান্য বই পুস্তক ডকুমেন্ট আকারে আদালতে উপস্থাপন করে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে যে, মীর কাসেম আলী ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বরের পর থেকে ঢাকায় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে যে সময়ে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে সে সময় তিনি চট্টগ্রামে ছিলেন না এবং চট্টগ্রামে যানওনি।
২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
Print Friendly, PDF & Email