ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা: ২ শিক্ষকের জামিন বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষাথী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় তার মা বিউটি অধিকারী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আজ রোববার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল আলম এ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।

এদিকে, মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখার প্রধান জিন্নাত আক্তার এদিন আদালতে উপস্থিত না থাকায় এবং তাদের পক্ষে কোন পদক্ষেপ না থাকায় তাদের জামিন বাতিল করে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন হাওলাদার।

এর আগে গত বছর ২৫ নভেম্বর অরিত্রীর বাবা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় দিলীপ অধিকারী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

মামলায় অরিত্রীর বাবার অভিযোগ, ২০১৮ সালের বছর ২ ডিসেম্বর আমার মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী (১৪) ভুলবশত বাসার ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন স্কুলে নিয়ে যায়। সেদিন তার সমাজ পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষার শেষে দিকে শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, পরদিন স্ত্রী বিউটি অধিকারীসহ স্কুলে যাই। শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা আমাদের অধ্যক্ষের রুমের সামনে অভিভাববদের ওয়েটিং রুমে বসিয়ে পরে ১১টার দিকে শাখা প্রধান জিনাত আক্তারের রুমে নিয়ে যায়।

আমাদের নিয়ে যাওয়ার পরই তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনার মেয়েকে টিসি দিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে। আমরা তিনজনই অরিত্রীর অপরাধ ক্ষমা করে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি। সে বলে, ডিসিশন হয়ে গেছে টিসি দিয়ে দিবো। এরপর আমরা সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের কাছে যাই। উনার রুমে গিয়েও মেয়ের জন্য ক্ষমা চাই এবং পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ চাই। তিনি আমাদের সামনে অরিত্রীর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন। এ কথা বলার সময় দিলীপ অধিকারী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি কান্না করতে করতে বলেন, কিন্ত ক্ষমা চাওয়ার পরও তিনি আমাদের রুম থেকে বের করে দেন।

পরে আমরা আবারও তার রুমে যায়। তখন তিনি আমাদের বলেন, আবার কেন ঢুকছেন? এর কিছুক্ষণ পর দেখি অরিত্রী সেখানে নেই। স্কুলে খোঁজাখুজি করি না পেয়ে বাসায় এসে অরিত্রীকে পাই। দুপুর একটার দিকে আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাই। বিকেল ৩টার দিকে আমার স্ত্রী আমাকে ফোন দেয়। বলে, অরিত্রী রুম খুলছে না এবং রুম ভেতর থেকে আটকানো। তখন আমার স্ত্রীকে বাসার কেয়ার টেকারকে ডাক দিতে বলি। কেয়ার টেকারসহ সকলে দরজা খোলার চেষ্টা করে।

পরে ভেন্টিলেটর দিয়ে কেয়ার টেকার রুমের ভেতরে ঢোকে এবং দেখে অরিত্রী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। শিক্ষিকা অরিত্রীর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছে এবং ওর সামনেই আমাদের অপমান করায় সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করে।

এর আগে এ মামলাটি গত ১০ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। মামলায় গত ২৫ মার্চ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার চার্জশিট দাখিল করেন।

ডিএন/সিএন/জেএএ/৪:৬পিএম/২৩৮২০২০২৩

Print Friendly, PDF & Email