নিজের প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার পাশে চিরনিদ্রায় সাংবাদিক আবদুস শহিদ

লহ্মীপুর প্রতিনিধি।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ গ্রামে বাড়ির পাশে মা-বাবার নামে আফিয়া-বারী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এনটিভির যুগ্ম প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুস শহিদ। কাজ শুরু করেছিলেন পাকা মসজিদ নির্মাণের। এজন্য পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ৪৫ শতাংশ জমি দানও করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই কাজ শেষ করে যেতে পারেননি।

আজ রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সেই এতিমখানার পাশে পারিবারিক কবরস্থানে আবদুস শহিদকে দাফন করা হয়েছে।   

এর আগে করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সকাল পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুস শহিদ। তাঁর মৃত্যুতে এনটিভির পরিবারের পক্ষ থেকে গভীর শোক জানিয়েছেন চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী। শোক জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ সাংবাদিক নেতারা।

গত ২৭ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য আবদুস শহিদ। মাঝে তাঁর শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হলেও সেই ধকল কিছুটা কাটিয়ে উঠে সবার মধ্যে আশা জাগিয়ে ছিলেন। তিনি ফিরে আসবেন প্রিয় এনটিভির অফিসে-এমন আশায় ছিলেন সহকর্মীরা। তিনি ফিরে এলেন ঠিকই, কিন্তু সবার কাছ থেকে চির বিদায় নিতে।

হাসপাতাল থেকে বিকেলে এনটিভি অফিসের সামনে আনা হয় আবদুস শহিদের লাশ। সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন এনটিভির সহকর্মীরা। জানাজা শেষে এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষ থেকে আবদুস শহীদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এরপর দ্বিতীয় জানাজা ও দাফনের উদ্দেশে আবদুস শহীদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ গ্রামে। সেখানে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার পাশে দাফন করা হয় তাঁর লাশ। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। অথচ তাঁর নিজের একমাত্র শিশু সন্তানকে এতিম করে দিয়ে চিরবিদায় নিলেন।

সৃজনশীল মানুষ আবদুস শহিদ দীর্ঘ কর্মজীবনে এনটিভিসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশে সভাপতি হিসেবে সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করে গেছেন তিনি।

ডিএন/জেএন/জেএএ/১২:২১পিএম/২৩৮২০২০৩৮

Print Friendly, PDF & Email