• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

রাজশাহীতে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলায় বিএমডিএ‘র দুই কর্মচারি বরখাস্ত

রাজশাহী প্রতিনিধি ।।

রাজশাহীতে এটিএন বাংলার দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে হামলায় জড়িত ভান্ডার রক্ষক মো. জীবন ও নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের গাড়ি চালক আব্দুস সবুরকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আকতার জাহান বলেন, আমরা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে ভিডিও ফুটেজ দেখে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এই ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় বিএমডিএ অফিসের প্রধান ফটকে বিএমডিএ’র  নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের নির্দেশে এটিএন নিউজের রাজশাহীর রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ধারণকৃত চার মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজে বরখাস্ত মো. জীবন ও আব্দুস সবুর ছাড়াও নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের পিএ নুরুল, পিওন সেলিম ও ফারুক এবং আনসার সদস্য এনামুলকে এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিককে প্রকাশ্যে মারধোর করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা দুইজনের বরখাস্তের দাবি করেছিলাম। সেই দাবি পূরণ হয়েছে। হামলায় জড়িত আরও পাঁচজন কালকের (মঙ্গলবার) মধ্যে অন্যত্র বদলির দাবি জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর সাংবাদিকদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।

হামলার শিকার সাংবাদিক বুলবুল হাবিব জানান, সরকার ঘোষিত নতুন অফিস সময়ে বিএমডিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে সময়মত আসছেন কিনা? সে সম্পর্কে ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামকে নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পর অফিসের সঙ্গে কথা বলে তারা লাইভ সম্প্রচার শুরু করেন। এ সময় নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের নির্দেশে ভান্ডার রক্ষক মো. জীবনের নেতৃত্বে নির্বাহী পরিচালকের গাড়িচালক আব্দুর সবুরসহ কয়েকজন কর্মচারি তাদের ওপর মারধোর করতে করতে অফিস চত্ত্বর থেকে বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের বুম ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন এবং প্রকাশ্য রাস্তায় পেটাতে থাকেন। এতে গুরুত্বর আহত হন ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম ও বুলবুল হাবিব। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহত বুলবুল হাবিবকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামকে রামেক হাসপাতালের ৩৩নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রুবেলের কানের পর্দা ফেটে গেছে। তার কানের ভেতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই হামলার প্রতিবাদে ফেটে পড়েন রাজশাহীর সাংবাদিকরা। তারা বিএমডিএ’র সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।

Print Friendly, PDF & Email