ইসির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত: নারী প্রার্থীদের প্রতীক চুড়ি-পুতুল-ভ্যানিটি ব্যাগ

01নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরে হয়ে যাওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে নারী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে কঠোর সমালোচনায় পড়েছিল নির্বাচন কমিশন। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনেও এ ধরনের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে স্বয়ং ইসির কর্মকর্তারাই সমালোচনা করেছেন।
পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের আঙ্গুর, গ্যাসের চুলা, চকলেট, চুড়ি, পুতুল, ফ্রক, ভ্যানিটি ব্যাগ, মৌমাছি ও হারমোনিয়াম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের কেটলি, খাঁচা, গ্লাস, টিস্যু বক্স, পান পাতা, বোয়াম, মুলা, মোড়া, শিল-পাটা ও স্টিলের আলমারি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থীরা।

সে সময় প্রার্থীরা অভিযোগ করেন- পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণেই ইসি এ ধরনের প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সমোলোচনার মুখে সেই সময় প্রতীক পরিববর্তনের আশ্বাসও দিয়েছিল ইসি।

চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ প্রার্থীদের রোষানলে পড়েন। পরে তিনি প্রতীক পরিবর্তনের আশ্বাস দেন। সেই মনবিনিময় সভায় দক্ষিণের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী শম্পা বসু বলেছিলেন, ‘আমাদের যেসব প্রতীক দেওয়া হয়েছে, তা কেবল মহিলারাই ব্যবহার করেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হতে এসেও কেন এ ধরনের প্রতীক পেতে হবে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন বলে প্রতীক হিসেবে মহিলাদের ব্যবহারযোগ্য দ্রব্যগুলোই দিতে হবে। এ ধরনের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। এ প্রতীকগুলোর পরিবর্তন চাই।’

পৌরসভার নির্বাচনের প্রতীকের বিষয়ে উপ-সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা পদের প্রতীক নিয়ে ইসি সমালোচনার মুখে পড়েছিল। এবার তাদের উচিত ছিল- বিতর্কিত প্রতীকগুলো এভোয়েড করা। চুড়ি, ফ্রক ও পুতুলের মতো প্রতীকগুলো একটু বেমানান বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ শাখার উপ-সচিব সামসুল আলম বলেন, ‘প্রতীক বড় বিষয় নয়, ভোটাররা ভোট দেবেন মানুষ হিসেবে, প্রতীক বিবেচনা করে নয়। যারা প্রতীক নিয়ে সমালোচনা করছেন তাদেরকে এখানে বসিয়ে দিলে তারাও এগুলোকেই বরাদ্দ দিতেন।’

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইসি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে বের হতে পারেনি, কথাটি সঠিক নয়। আর প্রতীকে মহিলা ও পুরুষ নয়, এগুলো তাত্বিক কথা বার্তা।’

Print Friendly, PDF & Email