• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হলো পাকিস্তানি ব্যাংক কর্মকর্তাকে

0002নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে পাকিস্তান স্টেট ব্যাংকের সিনিয়র জয়েন্ট ডিরেক্টর আসমা খালিদকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আমন্ত্রণে তিনি ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালায় যোগ দিতে এসেছিলেন। পাসপোর্টে ভিসা না থাকায় তাকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আসমা খালিদ অন অ্যারাইভাল ভিসা চেয়েছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানি নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার বিধান না থাকায় তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েন চলার মধ্যেই দেশটির সরকারি কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনা
ঘটলো। একই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে শিক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়।
বিমানবন্দর, ইমিগ্রেশন ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউএন-ডিইএসএ’র যৌথ আয়োজনে গতকাল থেকে দুই দিনের একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালা শুরু হয়েছে। ওই কর্মশালায় যোগ দিতে একদিন আগে রোববার বিকাল ৪টা ৪৪ মিনিটে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (কিউআর-৬৩৬) সরাসরি দোহা থেকে ঢাকায় আসেন। তার পাসপোর্ট নম্বর ডব্লিউএ-৪১০৬৬৫২। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে তিনি অন অ্যারাইভাল ভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তার আবেদনে অন অ্যারাইভাল ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাকে পাকিস্তান থেকে ভিসা নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। এ সময় আসমা খালিদ বিমানবন্দরে বসে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ঢাকাস্থ পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। এদিকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সরকারের উপর মহলের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে গতকাল দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়া পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের করাচিগামী পিকে-২৬৭ নম্বর ফ্লাইটে দেশে ফিরেন আসমা খালিদ। যদিও এক ঘণ্টারও বেশি সময় ফ্লাইটটি ডিলে হওয়ায় দুপুর দুইটা ৪৫ মিনিটে তা ছেড়ে যায়।
পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) মাহবুবুর রহমান জানান, ভিসা না নিয়ে আসায় আসমা খালিদকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানের নাগরিকদের ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসা দেয়ার বিধান না থাকায় তাদের আসলে কিছুই করার ছিল না।’ বিমানবন্দর এপিবিএন সূত্র জানায়, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তাকে রোববার দুপুর থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টা ইমিগ্রেশনেই রাখা হয়। এ সময় তিনি নিজের আমন্ত্রণ পত্র দেখিয়ে ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করেন। ইমিগ্রেশন পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যেসব দেশে বাংলাদেশের কনস্যুলেট অফিস বা দূতাবাস নেই সেসব দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়া হয়।
আসমা খালিদকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. কৌশিক বসুর সোমবারের বৈঠকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণপত্রে তাকে ভিসা নিয়ে আসার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু তিনি ভিসা নিয়ে আসেননি। সাধারণত আমরা যখন কোথাও আমন্ত্রিত হই ভিসা নিয়েই যাই। তিনি ভেবেছিলেন বাংলাদেশে বোধহয় অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়েই আসা যাবে। সে কারণে আর পাকিস্তান থেকে ভিসা পওয়ার চেষ্টাই করেননি। অন অ্যারাইভাল ভিসা মাঝে মাঝে পাওয়া যায়। কিন্তু কম। ভিসা না থাকার কারণেই বিমানবন্দরে তাকে বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু করার ছিল না। কারণ তিনি যখন ভিন্ন দেশে আসবেন সে দেশের নিয়ম মেনেই আসবেন। এটাই স্বাভাবিক।

Print Friendly, PDF & Email