ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান বিশিষ্টজনের
সারাদেশে ৬.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পঃ নিহত ৫, আহত শতাধিক
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। আজ ভোর ৫টা ৬ মিনিটে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। মুহুর্তেই কেঁপে উঠে গোটা দেশে। বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় কম্পন। আতঙ্কে মারা গেছেন ৫জন। সারাদেশে আহত হয়েছেন শতাধিক।
ঢাকার জুরাইনে হুড়োহুড়ির মধ্যে আতঙ্কে আতিকুর রহমান আতিক (২৭) নামের এক যুবকরে মৃত্যু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পাশ্ববর্তি মেহেরচন্ডি এলাকায় নিজ বাড়িতে বঙ্গবন্ধু হলের প্রধান বাবুর্চি খলিলুর রহমান নিহত হন। ভারতের নিকটবর্তী লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কদুরবাজার এলাকায় আব্দুল কুদ্দুস (৪০) আতঙ্কে মারা যান। ওই এলাকায় আহত হন ৩জন।
এছাড়া ভূমিকম্পের আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়ে ঢাকা ও সিলেটসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারতের মণিপুরে।
রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, নোয়াখালী, বরিশাল, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ভূকম্পনের খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটের দিকে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৮। উৎপত্তি স্থল ছিল ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের মনিপুর রাজ্য। যা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে ৩৩১ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে।
ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে দেশের ঢাকা, রাজশাহী ও লালমনিরহাটের পাটগ্রামে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে 50 বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত তিনজন হলেন রাজধানীর পূর্ব জুরাইন এলাকার আতিকুর রহমান আতিক (২৭) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রধান বাবুর্চি খলিলুর রহমান (৩৮) ও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ব্যবসায়ী নুর ইসলাম কন্দু (৫০)।
এদিকে, ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাদ থেকে লাফিয়ে ছয় শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদর দফতরের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সোমবার (০৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৭ মিনিটে ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকাসহ কেঁপে ওঠে পুরো দেশ। রিখটার স্কেলে এ কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৭।
নিহত আতিকুর রহমান আতিক রাজধানীর পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ফর্মগেট শাখায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের মইনউদ্দিনের ছেলে আতিকুর।
অন্যদিকে, নিহত খলিলুর রহমানের বাড়ি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মেহেরচণ্ডী এলাকায় এবং নুর ইসলাম কন্দু পাটগ্রাম উপজেলার একজন মুদি ব্যবসায়ী।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ৩৫১ কিলোমিটার দূরে ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইম্ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৫ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পটি ৫৭ কিলোমিটার গভীর এবং প্রাথমিক খবরে এটি মিয়ানমারে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, অাসাম-অরুণাচল প্রদেশেও ব্যাপকভাবে অনুভূত হয়েছে কম্পন। আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে মানুষ।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ভজন কুমার সরকার জানান, ভোর ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত রাজধানীর কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কোনো ভবন হেলে পড়ার খবরও পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর বাড্ডার হোসেন মার্কেটে কর্তব্যরত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কর্মচারী শ্রী মোহন চন্দ্র রায় জানান, যখন ভূমিকম্প যখন আঘাত হানলো তখন আমার খুব ভয়াবহ অবস্থা। কী করবো বুঝতে পারিনি। ১২তলা ভবনের নয়তলায় আমরা ছিলাম। ভবনটি এদিক-সেদিক কাঁপছিল। এ সময় নিচে নামবো নাকি উপরেই থাকবো এ নিয়ে দোতানায় ছিলাম।
কুমিল্লা নগরীর মসজিদে তখনই ফজরের আজান হয়নি। হঠাৎ চারদিকে মানুষের আর্ত-চিৎকার। বাসা-বাড়ি থেকে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। সোমবার ভোর প্রায় ৫টা ৫ মিনিটে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। কয়েক সেকেন্ডে স্থায়ী ওই কম্পনের ফলে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নগরীর বহুতল ভবনের বাসিন্দারা ভয়ে ভবন থেকে নিচে রাস্তায় নেমে আসেন। এদিকে ভূমি কম্পনের ফলে এখনো কুমিল্লার কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সারাদেশের সঙ্গে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ভোর ৫টা ৫ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে ভূমিকম্পে এখনো পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে ভূমিকম্পের সময় অনেকেই দ্রুত ঘুম থেকে উঠে উঁচু ভবনগুলো থেকে রাস্তায় নেমে আসেন।