উচ্চ ব্যয়ে নিকৃষ্ট বসবাস ঢাকায় : সব সূচকেই অবস্থা নিম্নগামী

imagesশেষ প্রতিবেদন:  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জরিপে ঢাকা বসবাস ও জীবনযাপনের প্রায় সব দিক দিয়েই বিশ্বের নিকৃষ্ট শহরের তালিকায় থাকে। আবার বিভিন্ন জরিপে জীবনযাত্রার ব্যয়ের দিক থেকেও শীর্ষ নগরীর তালিকায় থাকে ঢাকা।

জীবিকার তাগিদে কিংবা ভালোমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে প্রতিদিন ঢাকায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, সারা দেশ থেকে প্রতিদিন রাজধানীতে ঢুকছে গড়ে এক হাজার মানুষ।

উচ্চ ব্যয় করেও নিম্নমানের জীবন-এই বিপরীতমুখী অবস্থা রাজধানীবাসীর কষ্ট বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

অপরিকল্পিত নগরায়ণের পাশাপাশি দখল-দূষণে ঢাকার চারপাশের চারটি নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ঢাকার ভেতরের ৪৬টি খালের মধ্যে ২০টি এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাকি ২৬টি খালের প্রাণও নিভু নিভু। ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন যোগ হচ্ছে তিন শতাধিক যানবাহন। এতে শব্দদূষণের মাত্রা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাতাসে ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণা বেড়েছে পাঁচ গুণ। ফলে হাঁপানিসহ নানা রোগ ভর করেছে ঢাকায় বসবাসরত এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের ওপর। এতে বেড়ে গেছে স্বাস্থ্য খাতে খরচ। একটি আধুনিক নগরীতে যতটুকু সড়ক থাকার কথা, এর ধারেকাছেও নেই ঢাকায়।

ফলে তীব্র যানজটে প্রতিদিনই নাকাল হতে যাচ্ছে নাগরিকদের। ছিনতাই, খুন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসাবাড়িতে কখনো গ্যাস থাকে না, কখনো থাকে না বিদ্যুৎ। পানির জন্য রাস্তায় নামতে হয় নাগরিকদের। তিন হাসপাতাল ঘুরে কোথাও ভর্তি হতে না পেরে রাজপথে সন্তান প্রসবের ঘটনাও ঘটেছে ঢাকা শহরে। এভাবেই সারা বিশ্বের কাছে ঢাকা এখন এক নিকৃষ্ট নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য শহরের মধ্যে ঢাকা অবস্থান তালিকার শীর্ষ পর্যায়ে। একটি শহরের বাসযোগ্যতা পরিমাপের জন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি পাঁচটি বিষয়ের ওপর মোট ৪০টি সূচক ব্যবহার করে দেখতে পেয়েছে, অপরাধের মাত্রা ও সংঘাতের ঝুঁকি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, অবকাঠামো এবং সংস্কৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে বিশ্বের ১৪০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৩৭তম।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারসার কনসাল্টিং গ্রুপের অন্য এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বের ২২৩টি শহরের মধ্যে বসবাসের দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থান ২০৮ নম্বরে। একটি শহরের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অপরাধ, দূষণসহ বেশ কয়েকটি সূচক বিবেচনায় নিয়ে তালিকাটি তৈরি করেছে মারসা কনসাল্টিং গ্রুপ। তাতে দেখা গেছে, নিকৃষ্ট শহরের মধ্যে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনভিত্তিক সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট (এইচইআই) চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষণের নগরী।

তবে ঢাকায় পরিবেশ, অপরাধ, যানজট অস্বাভাবিক হলেও এখানে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। আসছে জানুয়ারিতে আবারও বাড়ি ভাড়া বাড়াতে যাচ্ছে বাড়িওয়ালারা। চাল, ডাল, তেল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ২০১৫ সালে ২১ লাখ সরকারি চাকুরের বেতন বাড়লেও সেই হারে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি বেসরকারি খাতে কর্মরত চাকরিজীবীদের বেতন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে গিয়ে হিসাব মেলাতে পারছে না সাধারণ মানুষ। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপের তথ্য মতে, ঢাকায় মানুষের খরচ বেড়েছে; কিন্তু সে হারে আয় বাড়েনি।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) জরিপ সম্পর্কে নগর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি দেশের পরিবহনব্যবস্থা কতটা উন্নত, সেটি জরিপের সময় মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু এই সূচকে ঢাকার অবস্থান নিচের দিকে। অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান নিয়েও একটি সূচক রয়েছে। সে সূচকেও বাংলাদেশ নিম্নগামী। আবাসনের ব্যবস্থাও নাজুক। স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে ঢাকায়। নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। বৈষম্য থাকলে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়। তিনি বলেন, গণপরিবহনের অবস্থা খুবই খারাপ। ব্যক্তিগত গাড়ির আধিপত্য বাড়ছে। নাগরিক সেবার মানও ভালো নয়। ঢাকার অনেক মানুষ এখনো সুপেয় পানি পাচ্ছে না, বিশেষ করে বস্তি এলাকায়। পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য অপসারণের অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবেশদূষণও বেশি। শিক্ষার প্রসার হয়েছে; কিন্তু গুণগত মান বাড়েনি। নজরুল ইসলাম আরো বলেন, এত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মানুষের ঢাকামুখী হওয়ার কারণ অর্থনীতি। ঢাকায় অর্থনৈতিক সুবিধা বেশি। অন্য জায়গায় তা নেই। তাই মানুষ ঢাকায় আসে। ঢাকার উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সেটি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা বসবাসের অযোগ্য কিংবা নিকৃষ্ট নগরী এক দিনেই হয়ে ওঠেনি। ধীরে ধীরে ঢাকার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাঁদের মতে, ঢাকার খালগুলো জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকার চারপাশে চারটি নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে। বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন  বলেন, ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমাতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। এটি করতে হলে ঢাকার বাইরে ভালোমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে সব শহরে। চিকিৎসাসেবাও বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এ ছাড়া সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন তিনি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা থেকে সুফল মেলেনি। এখন ভারত সরকার তাদের তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারে টাকা দিতে রাজি হয়েছে। চারটি নদী প্রভাবশালীদের দখল আর দূষণে শেষ হতে চলেছে। ঢাকার ভেতরে খাল নিয়ে সরকারি পাঁচটি সংস্থার মধ্যে চলছে দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতা। ২৬টি খাল উদ্ধারে সমন্বয়হীনতা চরমে। ঢাকার ভবনগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে। ইআইইউর তথ্য মতে, বিশ্বে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঢাকার প্রায় সাড়ে তিন লাখ পাকা ভবনের মধ্যে পৌনে এক লাখ ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করে সংস্থাটি।

ঢাকা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, ঢাকা এক ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। সরকারি সব সংস্থা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। ঢাকাকে সবুজ ঢাকায় রূপ দিতে সরকারের পক্ষ থেকে চিন্তা ও পরিকল্পনা করা হলেও মাঠপর্যায়ে সেগুলোর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। সরকারের কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায় না ঢাকার সমস্যার সমাধানে। তাঁর মতে, ঢাকার প্রধান সমস্যা যানজট। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা, শব্দদূষণ, নদী দখল অন্যতম সমস্যা বলে উল্লেখ করে ইকবাল হাবিব বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে ঢাকার সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। সুনগারিক হিসেবে নিজেকে দাবি করতে চাইলে রাস্তায় চলাচল, ময়লা-আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার না করার বিষয়ে নিজেদের সচেতন করে তুলতে হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নাগরিক সেবা দিতে সরকারি ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থা কাজ করছে ঢাকায়। এত সংস্থা কাজ করায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীনতা এবং পরস্পরকে দোষারোপের সুযোগ তৈরি হয় বলে মনে করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।

রাজধানীতে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ছয় দিনের উন্নয়ন মেলায় অংশ নিতে ফিলিপাইন থেকে ঢাকায় এসে অবস্থান করছেন দেশটির লিবরা কম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি ডুক নাজুইয়ান। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মানুষের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। কিন্তু যানজট বেশ ভুগিয়েছে আমাকে। ’ বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিন যত যাচ্ছে, ঢাকায় যানজট ততই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। যানজটের কারণে নগরীতে দিনে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বছরে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ২৭০ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। ঢাকায় পাঁচ বছর আগে একটি যানবাহন ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার গতিতে চললেও এখন চলছে ঘণ্টায় মাত্র সাত কিলোমিটার গতিতে। যানজট নিরসনে সরকার যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়, তাহলে ২০২৫ সালে ঢাকায় যানবাহনের গতি হবে ঘণ্টায় চার কিলোমিটার। অথচ মানুষের হেঁটে চলার গড় গতি পাঁচ কিলোমিটার।

নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হতে চলেছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘ঢাকা ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। প্রতিদিনই ঢাকায় মানুষের চাপ বাড়ছে। যানজটে শত শত ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হলেও যানজট কমেনি। ’ ঢাকার আশপাশের নদীগুলো সচল করতে পারলে যানজট কিছুটা কমবে বলেও অভিমত তাঁর। নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মনে করেন, পরিকল্পিতভাবে এই শহর গড়ে ওঠেনি। যত ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়ার কথা নাগরিকদের, সেটা পাচ্ছে না ঢাকাবাসী। গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, রাজধানীতে গড়ে ওঠা আবাসনের ৬০ শতাংশই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে।

হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের (এইচইআই) গবেষণার সূত্র ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় শব্দদূষণের সর্বোচ্চ মাত্রা ১৩০ ডেসিবলের মতো। এক কর্মকর্তা জানান, শব্দদূষণের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পেতে ২০০৬ সালে একটি বিধিমালা তৈরি করা হলেও সেটা কোনো কাজে আসছে না। বরং প্রতিনিয়তই বাড়ছে শব্দ দূষণের মাত্রা। ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে করা এক জরিপে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজধানীতে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ১৩৫ ডেসিবল পর্যন্ত রেকর্ড করেছে। এসব জায়গায় বাস করা মানুষের স্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। জরিপে শব্দদূষণের জন্য দায়ী করা হয়েছে যানবাহনকে। এতে প্রথম স্থানে আছে প্রাইভেট কার, এরপরে আছে মোটরসাইকেল ও বাস। শব্দদূষণের কারণে ঢাকার মানুষকে শুধু উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া, মনঃসংযোগ কমে যাওয়া, মাথাব্যথা ও মাথা ধরার জটিলতায় অস্বাভাবিক আচরণ করার মতো নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ৬৫ ডেসিবলের ওপরে শব্দ হলে হৃদরোগ, ৯০ ডেসিবলের ওপরে শব্দ আলসার এবং ১২০ ডেসিবলের বেশি শব্দে স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তিহীন অর্থাৎ বধির করতে পারে। রাজধানীর প্রায় সব জায়গায় ১২০ ডেসিবলের ওপর শব্দের মাত্রা রেকর্ড করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর

Print Friendly, PDF & Email