শিরোনাম :

  • শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫

বিবর্ণ বৈশাখেে অন্যরকম আগামীর প্রত্যাশা

মাহবুবা সুলতানা কলি ♦

দেশজুড়ে লকডাউনের মধ্যে এসেছে এক অন্যরকম বৈশাখ। নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান, চারুকলায় মঙ্গলশোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণের ৩৮ বছর ধরে যে নিয়মে বাংলাদেশের মানুষ বাঁধা পড়েছিল, সে নিয়ম এবার নেই— যেন জনসমাগম না হয়।

সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, আমরা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শপথ নিই— সামাজিক ভাইরাস প্রতিহত করার। পুরনো বৈষম্য ও অধিকারহীনতা যেন জেঁকে না বসে, সেটি মনে রাখতে হবে। সামাজিক সাম্য ও মানবিক মর্যাদা যেন কায়েম করতে পারি নতুন বছরে সেই নতুন প্রত্যাশা দিয়ে শুরু করি। এবারের প্রত্যয় যেন ব্যক্তিগত না হয়ে সমষ্টিগত হয়। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারলে আবারও লাল-সাদা কাপড় পরে নতুন বছরকে আহ্বান জানানোর দিন আসবে। মনে রাখতে হবে এক বৈশাখে শেষ হবে না। আগামী বৈশাখে আমরা আবারও উদযাপন করতে পারবো।

সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এবারের বর্ষবরণের বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ‘প্রথমত তথাগতভাবে যেভাবে বরণ করি, সেই উদযাপন যেন না করি। ব্যক্তিগতভাবে পরিবারের সঙ্গে যেন থাকি। জনসমাগম ঘটালে পরিস্থিতি আরও  প্রতিকূল হবে এবং আমরা আরেক বছরের জন্য হয়তো পিছিয়ে যাবো। নতুন বছরের কয়েক মাসের মধ্যে নতুন করে বিশ্ব গড়বো। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে উদযাপন না করার মধ্য দিয়েই শুরুটা হোক।’

উদযাপন হয় কতগুলো কারণে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুরনো যা শিক্ষা তা যেন গ্রহণ করি এবং এগিয়ে যাই। করোনাভাইরাস শিখিয়ে দিলো— মানুষ একা জীবনযাপন করে না। বড় বড় দেশ এক কাতারে এসে গেছে এই ভাইরাসের প্রকোপে। অফিসের মালি থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এখন এসে আমরা বুঝতে শুরু করেছি শেষ বিচারে আমরা মানুষ। যত বিত্তশালী প্রভাবশালী হোক না কেন একইরকম অরক্ষিত। এই শিক্ষা যদি সমাজের কাজে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে আগামী অন্যরকম হবে। বিত্ত ক্ষমতার প্রতি যে মোহ তা যেন পরিত্যাগ করি।’ চাল নিয়ে খেলাধুলা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গরিবকে কষ্ট দিচ্ছি। এই সামাজিক ভাইরাস প্রতিহত করতে হবে। এই ধরনের ভাইরাস উৎখাতের জন্য ভ্যাকসিন দরকার, আর  সেটি হলো শক্ত প্রতিরোধ।’