সুইস ব্যাংকের টাকা মন্ত্রী-আমলা ও আ.লীগের লোকদের: রিজভী

 নিজস্ব প্রতিবেদক।

সুইস ব্যাংকে কালো টাকা বাড়াতেই সরকার বার বার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।একই সঙ্গে সুইস ব্যাংকে জমানো টাকা সরকারের মন্ত্রী-আমলা ও দলের লোকদের বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) বিল সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, সিরিঞ্জে করে যেমন রক্ত টান দেয়, বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে এই সরকার জনগণের শরীরে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টান দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানালেও সরকার সংসদে বিল উপস্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, সরকার নির্লজ্জভাবে গায়ের জোরে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে। তাদের টাকা দরকার। এই টাকা কোথায় যাচ্ছে জানেন? এটাও গতকাল বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে। ৫ হাজার কয়েকশ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকের জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের।

‘আজকে ১১ থেকে ১২ বছর জনগণের এই টাকা আত্মসাত করে সুইস ব্যাংক ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহীরুহে পরিণত করেছে তারা। এখন আরও টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরও কালো টাকা পাঠাতে হবে-এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম তারা বৃদ্ধি করছে।’

যেখানে বিদ্যুৎ বিল হওয়ার কথা ১ হাজার থেকে ১১০০ বা ১২০০ টাকা, সেখানে ২০ হাজার ২৫ হাজার টাকা বিল আসছে। এই ভূতুড়ে বিল নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন ছাপা হলেও সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

করোনাভাইসরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, মানুষ মরছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই, ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসা নেই। সব কথা হয়তো গণমাধ্যমেও আসছে না।

‘হাসপাতালে গিয়ে কোভিড রোগী কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। কারণ তারা জনগণকে সুবিধা দেয়া, জনগণের কষ্ট লাঘব করার কোনো কাজ করেনি।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত ভেঙে গেছে। মানুষ এখন কুকুর-বিড়ালের মতো রাস্তায় মারা যাচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত মানুষ রাস্তায় মারা যাচ্ছে- এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উপহার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সম্রাটের মতো’ দেশ শাসন করছেন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

‘কোনো এক দেশের সম্রাট বলেছিলেন, আই অ্যাম ল, আমিই হলাম আইন। শেখ হাসিনা হলেন সেই সম্রাটের মতো। আমিই আইন, আমি যেটা বলব, সেটাই মানতে হবে। কিসের পার্লামেন্ট। এই নিশিরাতের পার্লামেন্ট, জো হুকুমের পার্লামেন্ট।’

রিজভী আরও বলেন, সরকার মনে করে আমি যেটা বলব সেটাই আইন। বেশি কথা বলো না, বেশি কথা বললে আমি একেবারে লালঘরে পাঠিয়ে দেব। বিরোধী দল ও বিরোধী মতের জন্য একেবারে পারমানেন্ট করে রেখেছে লাল ঘর, ইটের লাল দেয়ালের মধ্যে বন্দি করে রাখা হবে।

‘আমরা বলতে চাই, আমাদের বন্দি করবেন তারপরও আমরা প্রতিবাদ করব। আমাদেরকে মামলা দেবেন, আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাবেন-আমরা তো প্রস্তুত সব সময়। কিন্তু আপনার অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-জুলুম আর এদেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।’

মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি নবী উল্লাহ নবী, ফিউচার অব বাংলাদেশের শওকত আজিজ, সাজ্জাদুল হানিফ বক্তব্য রাখেন।

এ সময়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম, ফয়সাল প্রধান, আহম্মেদ উল্লাহ, জুনায়েদ চৌধুরী, বাবু তানভীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডিএন/পিএন/জেএএ

Print Friendly, PDF & Email