শিরোনাম :

  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

দুলাভাইয়ের থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে ভাগনে-ভাগনিকে খুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল শিক্ষার্থী ভাই-বোন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ।

বাবার থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতেই মেহেদী হাসান কামরুল (১০) ও তার বোন শিফা আক্তারকে (১৪) গলা কেটে খুন করেন মামা বাদল মিয়া (৩৫)।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভাগনে-ভাগনিকে খুনের দায় স্বীকার করেছেন বাদল।

গত বুধবার রাতে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামি বাদল কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার ক্ষুদে-দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে। গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার সবুজবাগ থানার গোড়ান এলাকা থেকে বাদলকে আটক করে পুলিশ।

বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, বাহরাইন প্রবাসী বাদল গত মার্চ মাসে দেশে ফিরে আসেন। গ্রামে গোষ্ঠীগত দাঙ্গার একটি মামলায় আসামি হওয়ার কারণে বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে তার বোন হাসিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। প্রবাসে থাকাকালে দোকান করার জন্য ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন বাদল।

এর মধ্যে তিন লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য কামালের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তার। এর জেরে সপ্তাহখানেক আগে বাদলকে থাপ্পড় মারেন কামাল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করেন বাদল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে কামালের ছেলে কামরুল তার মামা বাদলের রুমে যায়। বাদল তখন রুমে উচ্চ স্বরে গান বাজাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বাদল কামরুলের হাত-পা বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করে। পরে মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।

ভাগনি শিফা রুম ঝাড়ু দিতে গিয়ে দেখে ফেললে তাকেও মারার জন্য ধস্তাধস্তি করে বাদল। একপর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা মেরে বাথরুমে নিয়ে তাকেও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ অন্য একটি রুমের খাটের নিচে রেখে দেয়।

ঘটনার দিন সোমবার সন্ধ্যায় মাগরিবের আজান হওয়ার পরও কামরুলকে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি করার জন্য বাইরে বের হয়। কিছুক্ষণ পর শিফাকেও দেখতে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরই মধ্যে বাদলকে সঙ্গে নিয়ে বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট এলাকায় কামরুল ও শিফাকে খুঁজতে যান কামাল। কিন্তু কামালকে না বলেই বাদল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকার গোড়ান থেকে বাদলকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় নিহতদের বাবা কামাল বাদী হয়ে বাদলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বাঞ্ছারামপুর থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ জানান, মামলার তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামি বাদল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। আমরা দ্রুততার সঙ্গে মামলার অভিযোগপত্র তৈরি করতে পারবো।

ডিএন/সিএন/জেএএ/৩:৫৬পিএম/২৭৮২০২০১৮