শিরোনাম :

  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

‘টাকা না দেয়ায়’ নারীর নামে মাদকের মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনকে টাকা না দেওয়ায় নাজমা বেগম নামের একজনকে মাদক মামলায় মিথ্যা আসামি করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় আখাউড়া পৌর শহরের দূর্গাপুর গ্রামের নাজমা বেগমের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তার স্বজনেরা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজমা বেগমের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নাহিদা ইসলাম মিতু।

মিতু বলেন, ‘গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাদা পোশাকে চার থেকে পাঁচজন লোক জোর করে আমাদের ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় আমার মা বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে আমি ও আমার এক বোন ছিলাম। ওই লোকজন নিজেদেরকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোক বলে পরিচয় দেন। এ সময় তারা আমার মা মাদক ব্যবসা করে বলে আমাদের ঘর তল্লাশি শুরু করেন এবং আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমি তখন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও আশেপাশের বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনি। ঘণ্টাখানেক তল্লাশি করে আমাদের ঘরে কোনো মাদকদ্রব্য পাননি।’

তিনি বলেন, ‘পরে সকলের উপস্থিতিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন একটি জব্দ তালিকা করেন। সেই তালিকায় আমাদের বসত ঘরে কোনো মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন। জব্দ তালিকায় পৌর কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম, মো. আসলাম হোসেন ও আমি স্বাক্ষর করি। জব্দ তালিকার একটি কপি চাইলে তারা তা দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে আমি মোবাইল ফোনে জব্দ তালিকার ছবি তুলে রাখি।’

মিতু অভিযোগ করে বলেন, ‘লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে সহকারী উপপরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। তার মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। টাকা না দিলে মাদক মামলায় আমার মাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে হুমকি দেন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নাজমা বেগম বলেন, ‘আমি কখনো মাদক ব্যবসা করিনি। আমার নামে থানায় কোনো মামলা নাই।’

নাজমা বেগমের বাড়িতে অভিযান চালানোর গত মঙ্গলবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান আখাউড়া থানায় একটি মাদক মামলা করেন। সেই মামলায় নাজমা বেগমকে ২ন নম্বর আসামি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় সাজানো একটি মামলায় তাকে ফাঁসানো বলে বলে অভিযোগ করেন নাজমা বেগম।

পৌর কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘নাজমা বেগম মাদক বিক্রি করে বলে আমি কখনো শুনিনি। তল্লাশির সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ওই সময় তার ঘর থেকে কোনো মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদকদ্র নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘দূর্গাপুর এলাকা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ কালন মিয়া নামে চোরাকারবারীকে আটক করি। কালনের বক্তব্য এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নাজমা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি করা হয়। তবে নাজমা বেগমের বাড়িতে কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। কিন্তু নাজমা বেগম দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি কালনের বক্তব্যে তাকে এই মামলা আসামি করা হয়েছে।’ নাজমা বেগমের পরিবারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

ডিএন/সিএন/জেএএ/১০:৪২পিএম/২৭৮২০২০২৭