আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
আনিসুলের সঙ্গে মতবিনিএরঃ ডিএনসিসিকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি সম্পাদকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর উন্নয়ন ও জনগণের সুবিধার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) যেকোনো কাজে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। পাশাপাশি ডিএনসিসির যেকোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁরা সোচ্চার থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সম্পাদকেরা এসব কথা বলেন। ডিএনসিসি এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভার শুরুতেই মেয়র আনিসুল হক তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত আট মাসে নাগরিকদের জন্য নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন এবং অবৈধ দখল, পার্কিং ও যানজটমুক্ত ঢাকা শহর গড়ে তোলাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সিটি করপোরেশনের অনেক বদনাম আছে, ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তবে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা কাজ করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, সড়ক থেকে বর্জ্য সরাতে ৭২টি অস্থায়ী ট্রান্সফার স্টেশন বানানো, প্রায় ২০ হাজার বিলবোর্ড অপসারণ, যানজট কমাতে গাজীপুর থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত ২১টি ‘ইউ’ আকৃতির গাড়ি পারাপার সেতু বানানো, ১০টি এলাকার সড়ক অবৈধ পার্কিংমুক্ত করা হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, সিটি করপোরেশন যত কাজই করুক না কেন, জনগণ যদি সচেতন না হয় তবে কোনো কাজই ফলপ্রসূ হবে না। রাজধানীবাসীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রতিটি ছাপা পত্রিকায় একটি স্থায়ী জায়গা বরাদ্দ রাখার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় সমকাল পত্রিকার সম্পাদক গোলাম সারওয়ার মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তা বাস্তবায়নের পথ কণ্টকাকীর্ণ হবে। ঢাকার প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেট্রোপলিটন সরকারের কথা বলেছিলেন। এটা ছাড়া আপনি যেসব কাজ বলেছেন, সেগুলো সম্ভব নয়। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্ছেদ করা কঠিন হবে। এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নির্মাণের শুরুতেই গলদ রয়ে গেছে।’
দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘রাজধানীর উন্নয়নে ও সচেতনতা সৃষ্টিতে সিটি করপোরেশনের যে পরিমাণ সহযোগিতার প্রয়োজন তা আমরা দেব।’
দৈনিক জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ বলেন, ফুটপাত দখল, অবৈধ কার পার্কিং ও যানজট ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পরপর উচ্ছেদ চালাতে থাকলে একসময় অবৈধ দখলদার মুক্ত করা সম্ভব হবে।
কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি, ঢাকার চেহারা বদলাবে। অতীতে বহুবার অনেকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আপনার কাছ থেকে বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
ঢাকার নিবন্ধনবিহীন রিকশার বিষয়ে সিটি করপোরেশন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন মানবজমিন-এর সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তেজগাঁও-সাতরাস্তা থেকে কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত সড়ক অবৈধ ট্রাক পার্কিংমুক্ত করা হলেও রাতের বেলায় সড়কে ট্রাক রাখা হয়। অবৈধ দখলদারেরা ফেরত আসতে শুরু করেছে।’
মগবাজার-মৌচাক উড়ালসড়ক নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যয় বৃদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘একটা ফ্লাইওভারের কাজ শুরু হলো, বছরের পর বছর চলছে। খরচ বাড়ছে। অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলতে পারে না।’
ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান পরিবেশবান্ধব বাইসাইকেল চালানোকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেন।
সভায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইত্তেফাক-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বার্তা সংস্থা ইউএনবির ব্যুরো প্রধান মাহফুজুর রহমান, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।