শিরোনাম :

  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

ফাহিম হত্যা: সাবেক সহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

দেশনিউজ ডেস্ক।

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক তার সাবেক সহকারি টাইরেস ডেভো হাসপিলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডিগ্রি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় শনিবার অভিযুক্ত হাসপিলকে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে নেয়া হলে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচারক জোনাথন সভেটকি জামিনের সুবিধা ছাড়াই হাসপিলকে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে আগামী ১৭ আগস্ট আবারো তাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পুলিশকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ৯০ হাজার ডলার চুরির করার পর চাকরিচ্যুত হওয়া ফাহিম সালেহর সাবেক সহকারী ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে। খবর অনুযায়ী, এই অর্থ চুরির বিষয়টি টের পাওয়ার পর ফাহিম হাসপিলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। তবে বিষয়টি পুলিশকে না জানিয়ে ধীরে ধীরে টাকা শোধ করে দেয়ার জন্যে  টাইরেস ডেভো হাসপিলকে সুযোগ দেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই অর্থ না দেয়ার জন্যেই ফাহিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাসপিল।

পুলিশ বলছে, হত্যাকারী এমনভাবে কাজটি করতে চেয়েছিল, যেন সবাই ধারণা করে কোন পেশাদার খুনির কাজ এটি। তার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার জন্যে এমন কাজ করে সে। শুক্রবার সকালে ২১ বছর বয়সি হাসপিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহোর একটি অ্যাপার্টমেন্টের লবি থেকে গ্রেপ্তার করার সময় হাসপিল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কের গোয়েন্দা প্রধান রডনি কে হ্যারিসন জানান, টাইরেস ডেভো হাসপিল ছিলেন ফাহিম সালেহর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী। যিনি কিনা ফাহিমের অর্থনৈতিক এবং ব্যক্তিগত অনেক বিষয় দেখভাল করতেন। তিনি এটিও নিশ্চিত করেন, অনেক বড় অংকের টাকা চুরি করেছিলেন।

মাত্র চার বছর আগে নিউইয়র্কের ভ্যালি স্ট্রিমের সেন্ট্রাল হাই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেন হাসপিল। এরপর ভর্তি হন হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র ১৬ বছর বয়সে ফাহিম তাকে বড় পদে চাকুরি দেন। দিনে দিনে ফাহিমের ব্যক্তিগত অনেক বিষয় দেখভাল করতে শুরু করেন হাসপিল। আর বেতন হিসেবে তাকে মোটা অংকের টাকাই দেয়া হতো।

অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড আদালতে বলেন, টাইরেস ডেভো হাসপিলই যে ফাহিমকে খুন করেছেন, সে বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা ১৩ জুলাই সোমবারই ফাহিমকে হত্যা করা হয়েছে। পরদিন মঙ্গলবার হাসপিল মরদেহ সরিয়ে ফেলার জন্যে ফাহিমের ম্যানহাটনের লোয়ার ইস্ট সাইডের বিলাসবহুল কন্ডোতে যান। তবে ফাহিম সালেহর বোন সেই বাড়িতে চলে এসে লবি থেকে কলিংবেল বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান হাসপিল। তার আগে ম্যানহাটনের ওয়েস্ট ২৩ স্ট্রিটের হোম ডিপো নামে একটি বড় চেইন স্টোরে যাওয়ার জন্যে নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে গাড়ি ভাড়া করেন হাসপিল। সেখান থেকে একটি ইলেকট্রিক করাত এবং পরিষ্কার করার জিনিসপত্র কেনেন তিনি। সকাল ৯টার দিকে ওই স্টোরের সার্ভিলেন্স ক্যামেরায় হাসপিলকে এসব জিনিস কিনতে দেখা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং কম্পানি পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা, নাইজেরিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশে এমন ব্যবসায় করে সাফল্য পাওয়া ফাহিম সালেহর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোক প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে অনেকে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। নোঙর নামে একটি প্রতিষ্ঠান শনিবার “ফাহিম সালেহর জন্য শোকগাঁথা’ শীর্ষক একটি অনলাইন স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ডিএন/সিএন/জেএএ/১০:৪এএম/১৯৭২০২০২