প্রদীপের আরেক রেকর্ড ফাঁস: ‘স্যার মহাবিপদে পড়ছি, আপনার সাহায্য দরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক।

সেনা বাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা রাশেদকে হত্যা করে হত্যাকাণ্ড থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ফোনে আইনি পরামর্শ নিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাস।   পরামর্শদাতা ওই ব্যক্তি কে ছিল তা প্রকাশ পায়নি।

এই কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড আজ বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।

দেশনিউজের পাঠকদের জন্য এখানে কথোপকথনটি তুরে ধরা হলো-

পরামর্শদাতা: হ্যালো

ওসি প্রদীপ: স্যার আদাব স্যার

পরামর্শদাতা: হ্যা

ওসি প্রদীপ: স্যার আমি ওসি টেকনাফ প্রদীপ, স্যার

পরামর্শদাতা: হ্যা কি খবর প্রদীপ কোরবানির গরুর মধ্যে কি

ওসি প্রদীপ: স্যার একটা মহাবিপদে পড়ছি, আপনার সাহায্য দরকার

পরামর্শদাতা: বলো বলো

ওসি প্রদীপ: এখন আমরা স্যার একটা ১৫৩, ১৮৬ ও ৩০৭ এ মামলা নিছি স্যার

পরামর্শদাতা: ওয়ান ফিফটি থ্রি

ওসি প্রদীপ: স্যার থ্রি ফিফটি থ্রি

পরামর্শদাতা: থ্রি ফিফটি থ্রি সরকারি কর্মচারি আরেকটা হচ্ছে

ওসি প্রদীপ: আরেকটা হচ্ছে ১৮৬ পুলিশের কাজে বাধা

পরামর্শদাতা: আর্মিদেরকে ইন্টিমেশন দিছ কিনা?

ওসি প্রদীপ: এরপরে স্যার জানাইছি, আর্মি থেকে লোকজন আসছে

পরামর্শদাতা: এ কি আর্মির নাকি?

ওসি প্রদীপ: স্যার অবসরপ্রাপ্ত

পরামর্শদাতা: ও তাইলে এতো ডরের কি আছে?

ওসি প্রদীপ: এখন স্যার ও মারা গেছে, ইনজিওরড অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছে

পরামর্শদাতা: এর সঙ্গে যে লোকটা ছিল ওইটা কি?

ওসি প্রদীপ: ওইটা স্যার একটা ছাত্র, ইউনিভার্সিটির। সে বলছে যে তারা রাতের বেলা পাহাড়ের সিন নেয়ার জন্য আসছে। ওরা নাকি ইউটিউবের একটা চ্যানেল করার জন্য আসছে ভ্রমণের উপরে।

পরামর্শদাতা: গাড়িওয়ালারে এরেস্ট করছ কিনা?

ওসি প্রদীপ: স্যার গাড়িচালক তো ও নিজেই

পরামর্শদাতা: ও আচ্ছা আচ্ছা, গাড়ি জব্দ করছ কিনা?

ওসি প্রদীপ: জি স্যার করছি

পরামর্শদাতা: আচ্ছা তোমরা যে বাধা দিছ, ওভারটেক করে গেছে, এটার সাক্ষী আছে কিনা?

ওসি প্রদীপ: সাক্ষী আছে স্যার

পরামর্শদাতা: সাক্ষী থাকলে মামলা নিতে বলো

ওসি প্রদীপ: মামলা নিছি স্যার ১৮৬, ৩৫৩, ৩০৭

পরামর্শদাতা: প্রেয়ার দিয়া দিবা যে মার্ডার হইয়া গেছে

ওসি প্রদীপ: আরেকটা কেস দিতে হবে না স্যার?

পরামর্শদাতা: আরেকটা কেস নিবা?

ওসি প্রদীপ: আরেকটা কেস আমরা কি নিবো? ও যে সদর হাসপাতালে মারা গেছে তাদের একটা কেস নিয়ে নিবো স্যার?

পরামর্শদাতা: আমার তো মনে হয় সদর থানার একটা কেস নিলে ভালো হয়

ওসি প্রদীপ: ভালো হবে না স্যার?

পরামর্শদাতা: আমার মনে হয় ভালো হয়। আর্মির লোক তো পরে টানাটানি করে কিনা!

ওসি প্রদীপ: নাহলে তো স্যার ওরা স্যার লাশ নিয়ে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। আমরা একটা মামলা করে ফেললে ওই মামলাটা ট্যাগ করা যাবে।

পরামর্শদাতা: তাহলে তোমরা একটা কাজ করো না, ৩০৪ এও একটা মামলা নিয়া নিতে পারো।

ওসি প্রদীপ: ৩০৪ এ আমরা কি লিখবো স্যার?

পরামর্শদাতা: লেখবা যে হাউএভার মারা গেছিলো। এ কারণে মামলা করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

ওসি প্রদীপ: স্যার ৩০৭ এ আসামীর কলামে কি লিখবো?

পরামর্শদাতা: না আরেকটা সেপারেট মামলার জন্য বলছি। যেহেতু মারা গেছে তাই এ মামলা করা হলো

ওসি প্রদীপ: স্যার মামলা নিবো যে আসামীর কলামে নাম লিখতে হবে না?

পরামর্শদাতা: পুলিশে গুলি করছিলো, বুজছি তো। এই এজাহারটা পুরা লিখবা, যে এই এই কারণে তাকে অবস্ট্রাকশন করে আটকানো হইছিলো। আটকানো হওয়ার পরে এই মামলা রজু হইছে। হাসপাতালে পাঠানোর পরে সেখানে সে মারা গেছে। যেহেতু মানুষ মারা গেছে তাই তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রজু করা হলো, ৩০৪ এ

ওসি প্রদীপ: আসামী অজ্ঞাত

পরামর্শদাতা: এইটা করলে কোটে এইটা ট্যাগ হয়ে যাবে

ওসি প্রদীপ: স্যার ৩০৪ আমরা নিবো নাকি সেখানে ডিউটি থেকে নিয়ে নিবো?

পরামর্শদাতা: সদর থানায় হইবো নাকি মামলা?

ওসি প্রদীপ: সবকিছু লেখার পরে লেখবো যে মারা গেছে স্যার

পরামর্শদাতা: তোমার এজাহারটা হুবহু লেইখা যাইবা, যে এই এই মামলার আসামীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। যেহেতু মারা গেছে মামলা রজু করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হোক

ওসি প্রদীপ: সবকিছু লিখে লাস্টে এটা লিখবো

পরামর্শদাতা: যেহেতু মারা গেছে মামলা রজু করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হোক

ডিএন/সিএন/জেএএ/১:৪৪এএম/৮৮২০২০২৩০

Print Friendly, PDF & Email