শিরোনাম :

  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে ডেইলি স্টার সম্পাদকের গ্রেপ্তার চান জয়

01নিউজ ডেস্ক: সামরিক অভ্যুত্থানে উসকানি দিতে সাজানো ও মিথ্যা প্রচারণা চালানোর জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

এটিএন নিউজের এক অনুষ্ঠানে সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকারের সময় ডেইলি স্টারে ডিজিএফআইয়ের সরবরাহ করা খবর ছাপার কথা স্বীকার করার পর বৃহস্পতিবার রাত ২টা ১৯ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তারের দাবি জানান জয়।

জয় লিখেছেন, ‘মাহফুজ আনাম, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক, স্বীকার করেছেন যে তিনি আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অপবাদ আরোপ করতেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির গল্প ছাপিয়েছিলেন। তিনি সামরিক স্বৈরশাসনের সমর্থনে আমার মাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে এই কাজ করেছিলেন।’
‘একটি প্রধান সংবাদপত্রের সম্পাদক সামরিক বিদ্রোহে উসকানি দিতে যে মিথ্যা সাজানো প্রচারণা চালায় তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’

ইংরেজি দৈনিকটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার রাতে এটিএন নিউজে এক অনুষ্ঠানে প্রশ্নের মুখে সম্পাদক মাহফুজ আনাম স্বীকার করেন যে, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের সরবরাহ করা ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর’ যাচাই ছাড়া প্রকাশ করে সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল তিনি করেছেন।

ডেইলি স্টারের সম্পাদক বলেন, ‘এটা আমার সাংবাদিকতার জীবনে, সম্পাদক হিসেবে ভুল, এটা একটা বিরাট ভুল। সেটা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ডেইলি স্টারের বিতর্কিত ভূমিকার প্রসঙ্গ শুরুতেই সঞ্চালক তুললে তা অস্বীকার করেন মাহফুজ আনাম।
পরে আরেক আলোচক গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ উদাহরণ তুলে ধরলে মাহফুজ আনাম ভুল স্বীকার করেন।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মত, তার মিথ্যা গল্পের উসকানি আমার মাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে এবং ১১ মাস তিনি জেলে কাটিয়েছেন। আমি বিচার চাই। আমি চাই মাহফুজ আনাম আটক হোক এবং তার রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিচার হোক।’

সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে মাহফুজ আনামের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

‘তিনি (মাহফুজ আনাম) অব্যাহতভাবে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে তাদের অনৈতিকতা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হবার কথা লিখেন। তার নিজের স্বীকারোক্তি মতে তিনি নিজেই পুরোপুরি অনৈতিক এবং একজন মিথ্যাবাদী।’

‘তার অবশ্যই একজন সাংবাদিক হিসেবে থাকার কোনো অধিকার নাই- সম্পাদক তো অনেক দূরের বিষয়। তার কার্যক্রম দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা দেশপ্রেমহীন এবং বাংলাদেশবিরোধী।’

২০০৭ সালে সাবেক সেনাপ্রধান মইন উদ্দিন আহমেদের হস্তক্ষেপে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে, যাকে অনেকে ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকার বলে থাকেন,  ডেইলি স্টার এবং একই মালিকানায় প্রকাশিত প্রথম আলোর ‘সমর্থন’ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।

পরোক্ষ সেনাশাসন জারির আগে সিপিডির উদ্যোগে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সহযোগিতায় দেশজুড়ে নাগরিক সংলাপে ‘বিরাজনীতিকরণের’ প্রচার চালিয়ে অসাংবিধানিক সরকারের প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছিল বলে সমালোচকরা বলে থাকেন।

দুই প্রধান রাজনৈতিক নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে ওই সময় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তাদের চরিত্র হননের চেষ্টা চালানো হয়েছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।

তবে সে সময় আওয়ামী লীগ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে তেমন সরব না হলেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি দৈনিকের সাথে বর্তমান সরকারের কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন।