পোশাক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করবে বিজিএমইএ, আইজি ও আয়াত এডুকেশন

দেশের তৈরি পোষাক খাতের কর্মীদের সুস্থ্যতা নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করবে দেশের তৈরি পোষাক রপ্তানীকারকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ পোষাক উৎপাদন ও রপ্তানীকারক সমিতির (বিজিএমইএ), ইন্টেগ্রাল গ্লোবাল (আইজি) ও আয়াত এডুকেশন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিজিএমইএ ভবনে প্রতিষ্ঠান তিনটির প্রধানদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান ও আইজি’র পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা নাবিল আহমেদ। আয়াত এডুকেশন মূলত একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যার প্রধান লক্ষ্য দেশের যুবসমাজ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন করা। সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, গার্মেন্টস কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে আরও শক্তিশালীকরণ ও তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে বিজিএমইএ, আইজি ও আয়াত এডুকেশন। একই সাথে বিভিন্ন কারখানা ও সেখানকার জনগোষ্ঠীর শ^াসতন্ত্রের সমস্যাজনিত ও কোভিড-১৯ এর ঝুকি কমাতেও যৌথভাবে কাজ করবে এই তিনটি সংগঠন। পোষাক খাতের প্রায় ৯৫ ভাগ শ্রমিক এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ৭৫ ভাগ এবং তৃতীয় ডোজ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এটা চলমান থাকায় গার্মেন্টস কর্মীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি খুব কঠোরভাবে পরিপালন করে আসছে। তবে এসব কর্মীদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর মারাত্মকতার ব্যাপারে কোন তথ্য লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়নি। সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান বলেন, দেশে তৈরি পোষাক খাতে উন্নতির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনেক সময় গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের সঠিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা দিতে গিয়ে অনেক সীমাবদ্ধতার মুখোমুখী হতে হয়। আমাদের এই যৌথ উদ্যোগ পোষাক শ্রমিকদের সুস্থ্যতার প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে। এটা শুধুমাত্র তাদের শারীরিক সুস্থ্যতাকেই গুরুত্ব দিবে না, তাদের কাজের উৎপাদনশীলতাও আরও বহুগূণে বৃদ্ধি করবে। দেশে বর্তমানে ৪,৬০০টি কারখানায় মোট ৪.৫ মিলিয়ন কর্মী (যাদের মধ্যে ৭০ ভাগ নারী) কাজ করছে। সুতরাং গার্মেন্টস কারখানাগুলোর কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতিসাধন, শিল্প-কারখানার টেকসই উন্নতি নিশ্চিতকরণ এবং মহামারী ও অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য বিপর্যয় মোকাবিলায় কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে শক্তিশালীকরণ ও এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ। বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই অংশীদারিত্বমূলক সহযোগীতা চুক্তির মাধ্যমে কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতি ঘটাবে এবং আমাদের কর্মীদের উন্নতির নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধির অনুশীলনে সহযোগিতা করবে। আইজি’র পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা নাবিল আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রভাব ছিল ব্যাপক। ২০২০ ও ২০২১ সাল ছিল পুরো বিশ্বের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। কোম্পানীগুলো বাধ্য হয়েছে তাদের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে ও কর্মীদের ছেড়ে দিতে এবং উভয় পক্ষের মধ্যকার অসহায়ত্ব ছিল অগাধ। কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই অংশীদারত্বমূলক সমঝোতায় তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে আমরা সর্বাগ্রে অগ্রাধীকার দিয়েছি যাতে করে ভবিষ্যতে যেকোন ধরণের স্বাস্থ্য বিপর্যয় থেকে আমরা তাদের নিরাপদ রাখতে পারি। প্রাথমিকভাবে ইন্টেগ্রাল গ্লোবালের সহযোগিতায় আয়াত এডুকেশন বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল মিলগুলোতে দ্রুত কোভিড ছড়িয়ে পড়ারোধে প্রাথমিক পর্যায়টি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরের কর্মীদের ভ্যাকসিন কর্মসূচী ৭৭ ভাগ এ এবং সহযোগী কারখানাগুলোর প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম ৮৫ ভাগ এ উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। যা নিশ্চিতভাবেই কারখানাগুলোকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদ রেখেছে এবং সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দ্রুত হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।

-খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তি’র

Print Friendly, PDF & Email