এবি পার্টির ইফতারে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের সম্মেলন
জবাবদিহিতা না থাকায় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অপরাধ বাড়ছে: সুলতানা কামাল
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অপরাধ বাড়ছে। দুর্নীতিবাজরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রাষ্ট্র অথবা সমাজের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা না থাকার কারণে সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সচেতন নাগরিক কমিটি ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট সাপোর্টের (সনাক-ইয়েস) জাতীয় সম্মেলনে প্যানেল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘জাগ্রত বিবেক, দুর্জয় তারুণ্য-দুর্নীতি রুখবেই’ এই স্লোগানকে ধারণ করে অনুষ্ঠান আয়োজন করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। সম্মেলনে সারা দেশের ৪৫টি অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০০ হাজার কর্মী যোগ দেন। সুলতানা কামাল বলেন, সমাজে জবাবদিহিতা না থাকার কারণে মানুষ নির্যাতিত হয়েও বিচার পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, দেশের একটি গোষ্ঠী চাইছে একা একা চলতে। মানুষ কখনই একা চলতে পারে না। সবার গুণে একটি সমাজ পরিপূর্ণ ন্যায়ভিত্তিক সমাজে পরিণত হয়। একথা আমাদের মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। কাজে কেউ যদি মনে করেন একা একাই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন তাহলে ভুল পথে আছেন। আস্থা ও বিশ্বাসে যে ঘাটতি আছে তা আমাদেরকে দেশের কল্যাণের জন্য দূর করতে হবে।
সুলতানা কামাল আরও বলেন, সংবিধান জাতির কাছে একটি পবিত্র দলিল। রক্ষাকবজও বটে। বিভিন্ন সময় যেসব শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় যান তারা ওই পবিত্র দলিলকে সাক্ষী রেখে ক্ষমতায় গেছেন। কিন্তু, পরে ক্ষমতার দম্ভে ওই সংবিধানের বিভিন্ন আদেশ ও নিষেধ ভুলে যান। বিবেককে লালসার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে তারা অপরের বিবেককেও সম্মান করছেন না।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জাতির কাছে স্পষ্ট। টিআইবি দেশে যে কাজ করছে তাতে আমাদের ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ উদ্ধারের প্রশ্নই আসে না। আমাদের আয়ের উৎস সরকারের কাছে জমা দিয়েছি। অথচ কিছুদিন আগে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, টিআইবি ও আইএস এর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন মানহানিকর বক্তব্যে কিছুই মনে করিনি। কারণ আমরা যারা এখানে সমবেত হয়েছি তাদের একটি কথা শুধু ভাবতে হবে যে, বিভিন্ন পেশায় বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তেমন করে দেশের সেবা করার যে মহান পেশায় আমরা কাজ করে চলেছি সেখানে বিভিন্ন বিড়ম্বনা আসবে, আসাটায় স্বাভাবিক ব্যাপার। ওই বিড়ম্বনার কথাটি স্মরণ করে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সুলতানা কামাল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ করান।