পৌর নির্বাচনঃ আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত

3 Lawerনিজস্ব প্রতিবেদকঃ আসন্ন পৌর নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। গতকাল রাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের পর মনোনয়নপত্রে দলীয় সভানেত্রী স্বাক্ষর করেছেন। রাত থেকেই মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে চিঠি দেয়া শুরু হয়েছে। একইভাবে বিএনপিও দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। তবে কৌশলগত কারণে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন-সংক্রান্ত চিঠি হস্তান্তর শুরু হয়েছে। বিকালে দলীয় চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে কয়েকজন প্রার্থীর কাছে চিঠি হস্তান্তর করেন যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান। এছাড়া, মনোনীতদের চিঠি গতকাল থেকেই তৃণমূলে পাঠানো শুরু হয়েছে। আজ এবং আগামীকালের মধ্যে সব চিঠি পৌঁছে যাবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করে। এ বৈঠকে ২৩৫ জনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয় বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাতে দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হয়।
প্রার্থী চূড়ান্ত, মনোনীতদের চিঠি দিয়েছে বিএনপি
আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলের মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে চূড়ান্তভাবে মনোনীতদের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল সন্ধ্যায় ৭টার পর দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় থেকে পর্যায়ক্রমে এ চিঠি দেয়া হয়। প্রথমে মনোনয়ন পান রাজশাহী বিভাগের অধীন পৌরসভা প্রার্থীরা। তবে ২৩৬টি পৌরসভার মধ্যে সবগুলোতে সমর্থন চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। যাদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে তারা ইতিমধ্যে সবুজ সংকেত পেয়ে গেছেন। তারা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য প্রত্যয়নপত্র ছাড়া অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্নও করেছেন। মামলা-হামলা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলগত কারণে তাদের নাম গোপন রাখা হয়েছে। দলের নেতাদের ধারণা, তালিকা প্রকাশ হলে তাদের প্রার্থীদের আইনী জটিলতায় পড়তে পারেন। তাই আগামী ৩রা ডিসেম্বর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিলের পর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, কিছু পৌরসভায় এখনও সমর্থন চূড়ান্ত হয়নি। তবে আজকের মধ্যেই সেটা চূড়ান্ত হবে। দলের নির্বাচন সমন্বয় কমিটির সদস্য ও সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, প্রথমেই ঢাকা বিভাগের বাইরের এলাকাগুলোর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দেয়া হবে। পৌর নির্বাচনী এলাকার জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্তের পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে তৃণমূলে যাচ্ছে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ বার্তা। ওদিকে বিএনপির নির্বাচন সমন্বয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মনোনীতদের পাশাপাশি সব পৌরসভায় বিকল্প প্রার্থী রাখা হবে। যাতে দল মনোনীত কোন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হলে বিকল্প প্রার্থী দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। বিকল্প প্রার্থীদের কোন চিঠি দেয়া হবে না তারা মাঠে থাকবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রের তরফে তাদের ব্যাপারে স্থানীয় নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেশিরভাগ পৌর এলাকা থেকে একাধিক নাম এসেছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় করে সেখান থেকে একজনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রার্থী মনোনয়নে দলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তিনটি বিষয়কে যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে প্রাধান্য দিয়েছেন। বিষয়গুলো হচ্ছে- দল সমর্থিত বর্তমান পৌর মেয়র, বিগত নির্বাচনে স্বল্প ব্যবধানে পরাজিত প্রার্থী এবং দলের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও এলাকায় যাদের ভালো প্রভাব রয়েছে। সেই সঙ্গে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় পৌর ও উপজেলা নেতাদের কেউ কেউ পাচ্ছেন দলের সমর্থন। একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, এলাকার সাবেক এমপি ও দলের কেন্দ্র ও তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মতামত বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে জোটের শরিকদলগুলোর ব্যাপারে এখনও নিজেদের অবস্থান জানায়নি বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠকে জোটের বিভিন্ন দলের তরফে প্রায় ৬০টির মতো পৌরসভায় নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন চাওয়া হয়েছিল। সেখানে সবচেয়ে বেশি দাবি ছিল প্রধান শরিক দল জামায়াতের। কিন্তু বাস্তব প্রতিকূল পরিস্থিতি ও কৌশলগত কারণ বিবেচনায় সে সংখ্যা কোনভাবেই ২০-এর উপরে নিতে রাজি নয় বিএনপি। এ ছাড়া জোটের শরিকদলগুলোর তরফে যাদের পক্ষে সমর্থন চাওয়া হয়েছে তাদের বিজয়ের সম্ভাবনা বিবেচনা করেই বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে। জোটের শরিকদের ধানের শীষ প্রতীকে পৌর নির্বাচনের সুযোগ না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই লড়তে হবে তাদের। জোটের শরিকদের ব্যাপারে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জোটের শরিকেরা কতগুলো পৌরসভায় সমর্থন চেয়েছে জানি না। তবে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে তাদের একটি তালিকা দেয়ার কথা রয়েছে। জোটের শীর্ষ নেতাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। জানা  গেছে, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও জোটকে তেমন ছাড় দিচ্ছে না বিএনপি। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) একটি করে পৌরসভায় সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত   হয়েছে। তবে জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতের ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে গতরাতে প্রথমদিকে মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- রাজশাহীর কাটাখালিতে মাসুদ রানা, নওহাটায় শেখ মকবুল হোসেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহিউদ্দিন বাড়া, গোদাগাড়িতে আনোয়ারুল ইসলাম, কাকনহাটে ইসমাইল হোসেন খান, তানোরে মিজানুর রহমান, মুণ্ডুমালায় মোজাম্মেল হক, কেশোরহাটে আলাউদ্দিন আলো, ফেনীতে সদর পৌরসভায় ফজলুর রহমান বকুল, পরশুরামে মোস্তাহিদুল ইসলাম মাসুদ মনোনয়ন পান।
এদিকে মনোনয়নপ্রাপ্তদের হাতে চিঠি তুলে দেয়ার আগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মনোনয়ন প্রত্যয়নকারী মোহাম্মদ শাহজাহান এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, অনেক কথা থাকা সত্ত্বেও আমরা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল তাই পৌর নির্বাচনকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছি। এই চ্যালেঞ্জ শুধু দলের জন্য নয়, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ, মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাবার চ্যালেঞ্জ, ভোটকেন্দ্রে অবাধে ভোটাধিকারের পরিবেশ তৈরি করার চ্যালেঞ্জ। শাহজাহান বলেন, স্পষ্টভাষায় বলতে চাই- আমরা কোন শর্ত দিয়ে নির্বাচনে যাইনি। আমরা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভোটে অংশ নিচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা মাঠে থাকবো। তিনি বলেন, আমি আশা করি- নির্বাচন কমিশন ও সরকার আমাদের মাঠে থাকার যে ইচ্ছা তা শেষ পর্যন্ত, দয়া করে আমাদেরকে মাঠ থেকে সরিয়ে দেবেন না। আমরা নির্বাচনের মাঠে থেকে জনগণ কী চায়, তা যেন আমরা যাচাই করতে পারি। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যয়নকারী বলেন, আমাদের নেতা-কর্মী ও প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়ে যেন হয়রানির মুখে না পড়ে। নেতা-কর্মী যারা আটক রয়েছেন, তাদের জামিনের ব্যবস্থা করবেন। গণগ্রেপ্তার বন্ধ করবেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে আছেন, তাদের কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছি তা আমার পাশে বসা জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) থেকেই আপনারা বুঝতে পারছেন। আমরা শুধু জোটের নয়, প্রয়োজনে সমাজের দায়িত্বশীল ভালো লোক যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হতে চান প্রয়োজনে তাদেরকেও মনোনয়ন দেবো। কারণ, বিএনপির মন ছোট নয়। বিএনপি সারা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবে। জোটের শরিকদের কতটি আসন ছেড়ে দিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে আমরা সংখ্যা বলতে চাই না। এই নির্বাচনে বিএনপি তার শরিকদের নিয়েই অংশ নেবে। শরিকরা কেউ চাইলে তাদের বিমুখ করবো না। প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এটা জানতে ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব রাজনীতি  আছে। তাদের কী কৌশল হবে, কী প্রক্রিয়ায় তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, সেটা তাদের ভাবতে দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাপা (কাজী জাফর) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে দলের মনোনীত কিছু মেয়র প্রার্থীর হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মনোনয়ন প্রত্যয়নকারী মোহাম্মদ শাহজাহান। তারা হলেন- রাজশাহীর কাটাখালীর মাসুদ রানা, নওহাটায় শেখ মকবুল হোসেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহিউদ্দিন বাড়া। এদিকে দলের মনোনয়নপত্র বিতরণকে কেন্দ্র করে গতকাল বিকাল থেকেই গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের সামনে প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের সমর্থকরা ভিড় করেন।
পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের চিঠি পেয়েছেন বরিশালের ১৩ জন বিএনপি নেতা। গতকাল তারা বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান যুগ্ম মহাসচিব মো. শাজাহান স্বাক্ষরিত এ চিঠি পান। এদের মধ্যে ৬জন প্রার্থী চূড়ান্ত  হবে। বাকি ৮জন ডামি প্রার্থী হিসেবে থাকবেন। প্রথম ছয়জনের মনোনয়নপত্র দাখিলের পর কাগজপত্রে কোন সমস্যা হলে পরের ছয়জন প্রার্থী হবেন। অপরদিকে পরিবর্তন এসেছে গৌরনদী ও মুলাদি পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর। এখানে নির্ধারণ করেছে কন্দ্রীয় বিএনপি। তবে প্রথম যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল তারা ডামি প্রার্থী হিসেবে থাকবেন। বরিশাল জেলা বিএনপি (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান জানান, মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার জন্য তাদের একজন প্রার্থীই নির্বাচিত রয়েছেন। আর তার নামই কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি হলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন দিপেন। তার কোন ধরনের কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা হলে কোন ডামি প্রার্থী রাখা হয়নি। তবে গৌরনদী পৌরসভার জন্য পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম ফকিরকে প্রথমে মনোনীত করা হলেও কেন্দ্র তা পরিবর্তন করেছে। এখানে শরিফ স্বপন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন। তবে ডামি প্রার্থী হিসেবে মনিরুজ্জামান মনির এবং শাহ আলম ফকির থাকছেন। অপরদিকে মুলাদি পৌরসভার জন্য বিএনপি নেতা হারুন অর রশীদ খানের নাম প্রস্তাব করা হলেও এখানে আসাদ মাহামুদকে কেন্দ্র প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত ও ডামি প্রার্থীদের কেন্দ্র থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠি অনুসারে তারা মনোনয়ন পত্র দাখিল করবেন। বরিশাল জেলা বিএনপি (উত্তর) সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহীন বলেন, তাদের দেয়া ৭জন প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা ৭ জনই মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন। এরপর প্রথম তিনজন বাছাইতে টিকে থাকলে পরের চারজন প্রত্যাহার করে নিবেন। আর না নিলে এমনিতেই তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বানারীপাড়া পৌরসভার জন্য উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান মাস্টার ও বিএনপি নেতা শাহ আলম, বাকেরগঞ্জের জন্য পৌর বিএনপির অহ্বায়ক মতিউর রহমান মোল্লা, মোফাজ্জেল জমাদ্দার ও কামরুজ্জামান রাজীব এবং  উজিরপুর পৌরসভার জন্য  শহীদ হোসেন খান ও হুমায়ুন খান এর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই চিঠি পেয়েছেন কেন্দ্রের।
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগের পর এবার প্রার্থী চূড়ান্ত করছে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। ফেনী, দাগনভূঞা ও পরশুরাম পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছে দলগুলো। ফেনী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য জিয়া উদ্দিন মিস্টার জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফেনী পৌরসভায় মেয়র পদে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বকুল, দাগনভূঞা পৌরসভায় পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইফুর রহমান স্বপন ও পরশুরাম পৌরসভায় পরশুরাম পৌর যুবদলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এদিকে জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ায় পৌর নির্বাচনে ফেনীতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত করেছে জাপা। জাপা চেয়ারম্যানের প্রচার ও প্রকাশনা উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ার জানান, ফেনী পৌরসভায় জাতীয় যুবসংহতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এম এম ইকবাল আলমগীর, দাগনভূঞা পৌর জাপার সভাপতি সিরাজ উদ্দিন দুলাল, পরশুরামে পৌর জাপার সভাপতি আজিজুল হক মজুমদার পিন্টু।
এর আগে সরকার দল আওয়ামী লীগ ফেনীর তিন পৌরসভায় তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছিল। ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম জানান, ফেনী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকৃত হাজী আলাউদ্দিন। পরশুরামে বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহাম্মেদ চৌধুরী সাজেল। দাগনভূঞায় বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক খান।
বরগুনার তিনটি পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে বরগুনা জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, বরগুনা পৌরসভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলাম, পাথরঘাটা পৌরসভায় পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মনিরুজ্জামান এবং বেতাগী পৌরসভায় বেতাগী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হুমায়ন কবিরকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে জেলা বিএনপি। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লা জানান, তারা তিনটি পৌরসভা থেকে তিনজনকে চূড়ান্ত করে তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।
মোহনগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একক মেয়র প্রার্থী প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে দলের কেন্দ্রীয় নীতি-নির্ধারকদের কাছে পাঠিয়েছেন জেলা পর্যায়ে গঠিত পৌর মেয়র মনোনয়ন কমিটি। উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ৩০শে নভেম্বর নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মোহনগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান রতনকে সমর্থন জানিয়ে মোহনগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় নীতি-নির্ধারকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে জেলা বিএনপি ২৭শে নভেম্বর বর্তমান মোহনগঞ্জ পৌর মেয়র মো. মাহাবুবুন্নবী শেখকে  একক প্রার্থী নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপিত আনিছুর রহমান তালুকদার পেয়েছেন বিএনপির মনোনয়ন এ কথা নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও  সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা। কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হালিমুল আলম জন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন একথা নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সোলায়মান আলী ও দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান টিটু। উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আমিনুল ইসলামই জাতীয় পার্টির চূড়ান্ত পার্থী একথা নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী আবুল কাশেম রিপন ও কালাই উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এনামুল কবির।
ধামরাইয়ে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী  চূড়ান্ত করেছে দু-দলের হাই কমান্ড। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ বেনজীর আহম্মদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি এমএ মালেক জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর পৌর নির্বাচনে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ গোলাম কবিরকে চূড়ান্ত প্রার্থী করা হয়েছে বলে জানান। বিএনপি থেকে পৌর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আলহাজ নাজিম উদ্দিন মঞ্জুকেই দলের হাইকমান্ড আবারো পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে বলে জানা গেছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া এবং কুয়াকাটায়  আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় কার্যালয়ে নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবিএম মোশাররফ হোসেন এ তালিকা প্রকাশ করেন। এতে কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র হিসেবে সাবেক মেয়র হাজী হুমায়ুন সিকদারের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email