‘বেলা ১১টার মধ্যে ভোট হয়ে যাবে’

2সাতকানিয়া প্রতিনিধি: ‘এলাকার লোকজনকে বলাবলি করতে শোনা যাচ্ছে, বেলা ১১টার মধ্যে ভোট নিয়ে নেওয়া হবে। ভোটারসহ অন্য কোনো প্রার্থীকেও ভোটকেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবে না।’ ভোট জালিয়াতির আশঙ্কা প্রকাশ করে এমন মন্তব্য করেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও বিএনপির কর্মী মোহাম্মদ জকরিয়া।

পৌরসভায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আরও অনেক ভোটার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতাও একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পৌরসভা বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম ও লাঙল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুপ চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যেই মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জাফর আলম বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ভোটের দিনের অবস্থা দেখে কেন্দ্রে যাওয়ার সাহস পাইনি। এবার পৌর নির্বাচনেও একই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি হবে বলে শোনা যাচ্ছে।’
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেও স্বাভাবিকভাবেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী। তাঁর গণসংযোগ ও প্রচারণায় দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।
বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী রফিকুল আলম গত মঙ্গলবার বিকেলে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে পৌরসভার সামিয়ারপাড়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। তবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী ও পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নওয়াব মিয়া বলেন, কেন্দ্র দখলের ব্যাপারে যেসব কথা শোনা যাচ্ছে, তাতে নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা ভয়ে ভয়ে আছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ছদাহা এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আমরা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষপাতী। তাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে প্রস্তুত।’ তিনি আরও বলেন, পৌর এলাকায় এখনো কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সব দলের প্রার্থীরাই সমানভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া এখনো কোনো প্রার্থী অন্য কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধেও কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি।

Print Friendly, PDF & Email