শিরোনাম :

  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

দুই নেত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ

Shakhawatকমিশনে যোগদানের সপ্তাহখানেকের মাথায় আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে আমার সাথে প্রায় পনের মিনিট কথা বলেন। আমার নিয়োগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, তিনি আমার বক্তব্য শুনেছেন এবং মাঝে মধ্যে পত্রিকায় লেখাও পড়েছেন। তিনি ভেবেছিলেন, আমি হয়তো উপদেষ্টাম-লীতে থাকব তবুও তার মতে নির্বাচন কমিশনেই ভালো হয়েছে। আমার অন্তর্ভুক্তিকে স্বাগতম জানিয়ে বলেছিলেন, নির্বাচন যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অনুষ্ঠিত হয়। আমি তাঁকে মনে করালাম যে, তিনি তাঁর এবং সমমনা দলের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বা ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ইত্যাদি বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চাইছেন কি না? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ঠিক তেমন নয় তবে তার মতে এসব করতে বেশি সময় লাগবার কথা নয়।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন তার লেখা ‘নির্বাচন কমিশনে পাঁচ বছর’ শীর্ষক বইয়ে এসব কথা লিখেছেন। এম সাখাওয়াত হোসেন আরও লিখেছেন, শেখ হাসিনার সাথে আমার কখনওই এত সময় কথা হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের শপথ গ্রহণের দিন কুশল বিনিময় হয়েছিল মাত্র। তবে তাঁর সাথে কথা বলে আমার মনে হয়েছিল তিনি কথা বলতে ভালোবাসেন। আলোচনা শুরু করলে বেশ খোলামনে আলোচনা করেন। অবশ্য এর পরিচয় আমি পরেও পেয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে অত্যন্ত আপন করে নিতে পারেন। ওই দিনের ওই আলোচনায় মনে হল বেশকিছু দাবি যেগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা মহাজোট সোচ্চার ছিল তার বেশিরভাগই ছিল রাজনৈতিক।
শেখ হাসিনার সাথে কথা বলবার প্রায় সপ্তাহের মাথায় এক সন্ধ্যায় ফোন পেলাম প্রাক্তন সেনাপ্রধান, বর্তমানে বিএনপি নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে। তাঁর সাথে আমার বহু বছরের পরিচয়। তিনি আমার নিয়োগের প্রথম দিকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। ফোনে প্রারম্ভিক আলাপে সে কথা বলেই বললেন যে, তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সামনেই ফোন করেছেন এবং তিনি (খালেদা জিয়া) আমার সাথে কথা বলতে চাইছেন আমি কথা বলবো কি না? আমি সাথে সাথে বললাম, নিশ্চয়ই।
বেগম খালেদা জিয়াকে আমি সর্বপ্রথম দেখি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে। তিনি তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে স্বামীর সাথে যোগ দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান আমার এক ব্যাচ জুনিয়র কোর্সের প্রশিক্ষক প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন। মনে পড়ে কোন এক ঈদে একাডেমি প্রাঙ্গণে এই দম্পতির সাথে দেখা হয়েছিল, কথাও হয়েছিল। দু’ জনেই ছিলেন স্বল্পভাষী। ওই সময় একজন ক্যাডেট হিসেবে যতটুকু কথা।
ওইদিন সদ্য ক্ষমতা ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের গলায় ‘হ্যালো’ শুনে কিছুক্ষণের জন্য আবেগপ্রবণ হয়েছিলাম। সাথে সাথে সামলে নিয়ে অভিবাদন দিলে তিনি বললেন যে, তিনি আমার সাথে তার দেখা হওয়া, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমার বক্তব্য এবং ৎঁংর তে যাওয়ার কথা মনে করছেন। প্রাথমিক আলাপ শেষ করে তিনি যা বললেন, তার সারসংক্ষেপ হল যে, তিনিও সত্ত্বর নির্বাচন দাবি করছেন।