আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন
ব্যাটিং কোচ ফ্লাওয়ারের গলায় ছুরি ধরেছিলেন ইউনিস খান!
দেশনিউজ ডেস্ক।
গুরুর দেয়া পরামর্শ মনে ধরেনি। রাগে তাই সটান তার গলায় ছুরি চেপে ধরলেন শিষ্য! চিত্রন্যাট্যের সংলাপ নয়। পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্দরমহলের কাহিনী। যেখানে কোচের ভূমিকায় ছিলেন গ্রান্ট ফ্লাওয়ার। আর গুণধর ক্রিকেটারটি হলেন ইউনিস খান, পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।
২০১৬ সালের সেই চাঞ্চল্যকর ঘটনা এতদিন পর ফাঁস করলেন পাকিস্তান দলের তৎকালীন ব্যাটিং কোচ ফ্লাওয়ার। ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এশিয়ার দলটিতে টানা পাঁচ বছর কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটারটি।
বৃহস্পতিবার ‘ফলোয়িং অন ক্রিকেট পডকাস্ট’ নামের এক অনুষ্ঠানে ভাই অ্যান্ডির সঙ্গে কথা বলছিলেন গ্রান্ট। সেখানেই তাকে জিজ্ঞেস করা হয় কোচিং কেরিয়ারে যে সকল শিষ্যকে সামলাতে গিয়ে তাকে বেগ পেতে হয়েছে, তাদের মধ্যে কাকে তিনি সবার উপরে রাখবেন। ভাবতে বেশি সময় নেননি গ্রান্ট ফ্লাওয়ার। ঝটপট তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বাধিক রানের মালিক ইউনিস খানের নাম। আর ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালে পাকিস্তান দলের অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়।
কেরিয়ারের গোধূলিতে দাঁড়িয়ে থাকা ইউনিস ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়ে যান। পর দিন ব্রেকফাস্ট টেবিলে তাকে ব্যাটিং সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দিতে গিয়েছিলেন গ্রান্ট ফ্লাওয়ার। কিন্তু ব্যাটিং কোচের দাওয়াই একদম পছন্দ হয়নি ইউনিসের। মুহূর্তের মধ্যে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন তিনি।
ফ্লাওয়ার বলছেন, ‘ইউনিসকে সামলানোটা বেশ মুশকিল কাজ ছিল। ও যে অনেক বড় মাপের ব্যাটসম্যান ছিল, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দুর্দান্ত বর্ণময় কেরিয়ার। পরিসংখ্যানের বিচারে আমার সঙ্গে ওর কোনো তুলনাই চলে না। পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান করেছে সে। কিন্তু ওর মেজাজ বোঝা ছিল দায়। ব্রিসবেনে ২০১৬ সালের একটা ঘটনার কথা আমার মনে পড়ছে। টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন নাস্তার টেবিলে ওকে ব্যাটিং নিয়ে কিছু উপদেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পরামর্শ সে একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি। রাগে রীতিমতো রণমূর্তি ধারণ করল। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই টেবল থেকে ছুরি তুলে নিয়ে আমার গলায় চেপে ধরল। দলের প্রধান কোচ মিকি আর্থারও তখন সেখানে উপস্থিত। মিকির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’ রেগে গেলেও ইউনিস সম্ভবত গ্রান্টের উপদেশ শুনেছিলেন। ব্রিসবেনে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫ রান করার পর সিডনিতে সিরিজের শেষ টেস্টে অপরাজিত ১৭৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেছিলেন ইউনিস।
গ্রান্ট ফ্লাওয়ার অবশ্য বলছেন, কোচিং করাতে গেলে এমন একটু-আধটু ঝামেলা পোহাতেই হয়। তার কথায়, ‘এগুলোও কোচিংয়ের অংশ। তবে আমি এটা উপভোগ করেছি। এখনো অনেক কিছুই শেখার বাকি রয়েছে।’
সেইসঙ্গে তিনি জানান, পাকিস্তান দলে কাজ করতে গিয়ে আরো একটি অদ্ভুত চরিত্র সামলাতে হয়েছে তাকে। তিনি হলেন ওপেনার আহমেদ শাহজাদ। তাকে নিয়ে ফ্লাওয়ার বলেন, ‘ও খুবই দক্ষ ব্যাটসম্যান। কিন্তু ততটাই অবাধ্য। প্রত্যেক দলেই এমন কিছু অবাধ্য খেলোয়াড় থাকে।’
সূত্র : বর্তমান
ডিএন/সিএন/জেএএ