রায় পড়ে আমি হতবাক হয়েছি : ব্যারিষ্টার মওদুদ

moududনিজস্ব প্রতিবেদকঃ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে অনেক ভুল-ভ্রান্তি এবং অনেক উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার এ মামলার রায়ের বিপক্ষে হাইকোর্টে আপিল আবেদন দাখিলের পর সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতির কক্ষের সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মওদুদ অভিযোগ করেন, রায়ের পর্যবেক্ষণের বেশির ভাগ বক্তব্য অবান্তর। তার ভাষায় এর পাঁচ ভাগের চার ভাগ বক্তব্যই অবান্তর।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রমাণিত হয় না। বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্যই তাকে এভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি উচ্চ আদালতে তিনি খালাস পাবেন।

মওদুদ জানান, অনেকগুলো গ্রাউন্ডে আপিল আবেদন করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আমরা খালেদা জিয়ার জামিন এবং আপিল গ্রহণের আবেদন করব।

ব্রিফিংকালে মওদুদের সাথে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকানসহ আরো অনেক আইনজীবী।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ আরো চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৬৩২ পৃষ্ঠা রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য তিন হাজার পৃষ্ঠার কার্টিজ পেপার আদালতে জমা দেন খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। কিন্তু গতকাল সোমবার এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৩ দিন ধরে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। রায়ের সার্টিফায়েড কপি না মেলায় জামিন আবেদন করতে পারেননি তিনি।

প্রায় ১০ বছর আগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে থাকার সময় এই মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

সেখানে অভিযোগ করা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দেয়া হলেও, তা এতিম বা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় করা হয়নি। বরং সেই টাকা নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

কিন্তু আসামিপক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে বর্তমানে ওই অর্থ ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে এবং তা সুদে-আসলে বেড়ে ছয় কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের তখনকার উপ সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ (বর্তমানে উপ-পরিচালক) এ মামলার এজাহারে খালেদা জিয়াসহ মোট সাতজনকে আসামি করেন।

বাকি ছয়জন হলেন- খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক (ইকোনো কামাল), সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও সৈয়দ আহমেদ ওরফে সায়ীদ আহমেদ।

Print Friendly, PDF & Email