বিএফইউজে-ডিইউজে’র বিক্ষোভ

সংগ্রাম সম্পাদকসহ সকল সাংবাদিকের মামলা প্রত্যাহার না করলে সর্বাত্মক আন্দোলন


নিজস্ব প্রতিবেদক |

দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুরকারি সন্ত্রাসীদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার ও পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদের রিমান্ড বাতিল করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে পত্রিকার চীফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বার্তা সম্পাদক সাদাত হোসেনসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেন সাংবাদিক নেতারা। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। এসময় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে করা নতুন মিথ্যা মামলারও প্রতিবাদ জানান।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথভাবে এই বিক্ষোভ সমাবেশে এ আহবান জানানো হয়েছে । ডিইউজে’র সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাতের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজে’র মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজে’র সিনিয়র সহ সভাপতি নূরুল আমীন রোকন, নর্থ বেঙ্গল সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসীন, বিএফইউজে’র দফতর সম্পাদক আবু ইউসুফ, ডিইউজে’র কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোয়ার, জনকল্যাণ সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ ও আপ্যায়ন সম্পাদক এইচ এম আকতার প্রমুখ।
বিএফইউজে’র মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও দেশে সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরা নিরাপদ নয়। সর্বশেষ দেশের স্বনামধন্য সাংবাদিক, গবেষক, লেখক ও শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের একজন দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের মতো একজন সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষকে নির্যাতন, অপমান, অপদস্ত করা হয়েছে যা চরম অমানবিক ও বর্বরোচিত। এটা শুধু সংগ্রামের সম্পাদকের উপর হামলা নয় এটা দেশের সকল সংবাদপত্রের সম্পাদকদের উপর হামলা। সংবাদপত্রের উপর হামলা। বুদ্ধিজীবীদের উপর হামলা। লেখকদের উপর হামলা। গবেষকদের উপর হামলা। এটা কোনোভাবেই সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারে না। তিনি বলেন, নিউজে সংক্ষুব্ধ হলে প্রতিবাদ কিংবা প্রেস কাউন্সিল অথবা কোর্টে যেতে পারতো কিন্তু তা না করে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দুটি টিভি চ্যানেল, ক্যামেরাসহ কথিত সংগঠনের আড়ালে একদল গুন্ডাবাহিনী, পুলিশকে সাথে নিয়ে হামলা চালায়। সরকার একই ভাবে দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ ৩৪টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয়। দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকের রিমান্ড বাতিল করে তাকে সসম্মানে মুক্তির দাবি করছি। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি। এম আবদুল্লাহ আরো বলেন, দেশের অন্যতম বুদ্ধিজীবী দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে পুলিশ আটক করে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংগ্রামের উপর যে হামলা করেছে তা দেশে নজিরবিহীন। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বর্ষিয়ান সম্পাদক আবুল আসাদকে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এম এ আজিজ বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। নেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। সংগ্রাম অফিসে যেভাবে সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালিয়েছে এবং সম্পাদককে যেভাবে টেনে হেচড়ে অফিস থেকে নামিয়েছে তা বর্বরতা ছাড়া আর কিছু না। বিনা মামলা ও ওয়ারেন্টে সম্পাদককে ধরে নিয়ে যাওয়া নজিরবিহীন। স্বাধীর দেশে এমন ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে দেমে এখণ একদলীয় গণতন্ত্র চলছে। দেশে বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না।
ডিইউজে’র সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। এ সরকার মুখে স্বাধীনতার কথা বলে। যদিও তাদের কার্যকলাপে স্বাধীনতার কথা তাদের মুখে মানায় না। দৈনিক সংগ্রামের উপর যে হামলা করা হয়েছে এবং সম্পাদককে যে নির্যাতন করা হয়েছে তা বর্বর। এ নির্যাতন শুধু আসাদ ভাইয়ের উপর নয়, পুরো সাংবাদিকের উপর। হামলাকারীদের চিহিৃত করে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরও বড় কর্মসূচি ঘোষাণা করবো।
শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতন এখনো বিদ্যমান রয়েছে। দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক বুদ্ধিজীবী আবুল আসাদকে নির্যাতন করায় তার প্রমান হয়েছে। যেভাবে সংগ্রাম অফিসে হামলা হয়েছে তা বর্বরতা ছাড়া আর কিছু না। এই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচিছ।

Print Friendly, PDF & Email