দিল্লির কাছে গুলি করে সাংবাদিক হত্যা, দুই খুনিসহ ৯ জন গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক |

ভারতের রাজধানী দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদে সাংবাদিক বিক্রম যোশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে দুই পুলিশ সদস্যকে। নিন্দার ঝড় উঠেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে।

এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, সাংবাদিক বিক্রমকে সোমবার রাতে তার দুই মেয়ের সামনে গুলি করা হয়। তিনি আজ বুধবার সকালে মারা গেছেন। হত্যাকান্ডের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিক্রম যোশি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। তার এক মেয়ে মানুষের সহায়তা চেয়ে আর্ত চিৎকার করছেন।

ঘটনার সময় বিক্রম তার দুই মেয়েকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় একদল মানুষ তার ওপর হামলা করে। ঘটনা সোমবার রাত সাড়ে ১০টার। তারা তার ওপর গুলি ছোড়ে। গাজিয়াবাদ সিনিয়র এসপি কালানিধি নাইথানি বলেছেন, এ ঘটনায় রবী ও ছোটা নামে প্রধান দুই আসামী সহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র। নিহত সাংবাদিকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রাজ্য।

কিন্তু তার পরিবারের দাবি, পুলিশের অসহযোগিতায় মরতে হয়েছে বিক্রম যোশিকে। কারণ, সোমবার রাতে হামলার চারদিন আগে তিনি পুলিশে অভিযোগ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, একদল যুবক তার ভাতিজিকে হয়রান করছে। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি কানে তোলেনি। এরই মূল্য দিতে হয়েছে বিক্রমকে।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, একদল সশস্ত্র লোক বিক্রমের মোটরসাইকেল বাড়ির কাছাকাছি থামিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঘিরে ধরে তারা। কোন সময় না দিয়ে তাকে মোটরসাইকেল থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে নেয়। তাকে আঘাত করে। গুলি করে। এ সময় তার দুই মেয়ে প্রাণভয়ে দৌড়াতে থাকেন। হামলাকারীদের দেখা যায় বিক্রম যোশিকে টেনে নিচ্ছে তাদের গাড়ির দিকে। এক পর্যায়ে তাকে ফেলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আহত অবস্থায় পড়ে থাকেন বিক্রম যোশি। এক কন্যা আবার তার কাছে ফিরে যান। তিনি অন্যদের সহায়তা চেয়ে আর্তনাদ করেন।

এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় বেশ কিছু নেতা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটে বলেছেন, বিক্রম যোশিকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, তিনি ভাতিজিকে হয়রান করার প্রতিবাদ করেছিলেন। তার শোকস্তব্ধ পরিবারের জন্য সমবেদনা। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা গুন্ডারাজ কায়েম করেছে। বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতী বলেছেন, উত্তরপ্রদেশজুড়ে হত্যাকাণ্ডের ধরন, বিশেষ করে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজ্যে আইন শৃংখলা বলতে কিছু নেই।

এই হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক টুইটে বলেছেন, সাংবাদিক বিক্রম যোশির পরিবারের প্রতি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে সহানুভূতি। বিক্রম যোশি ছিলেন সাহসী সাংবাদিক। ভাতিজিকে হয়রান করার প্রতিবাদে এফআইআর করার কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে উত্তর প্রদেশে। দেশে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রতিবাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করা হচ্ছে। এর বাইরে নয় মিডিয়া।

ডিএন/এমএন/বিএইচ/১২ঃ৩৫পিএম/২২০৭২০২০-২

Print Friendly, PDF & Email